পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হইয়া তৎক্ষণাৎ আমি নিজদেহে প্ৰবেশ করিলাম। গাড়ীর গদিতে বাঘছালখানি পাতিয়া তাহার উপর আমি গঠ হইয়া বসিলাম। নিজের শরীর পুনরায় পাইয়া আনন্দে একটি দীর্ঘনিঃশ্বাস পরিত্যাগ করিলাম। কন্যার জন্য যে সমুদয় গহনা প্ৰস্তুত করিয়াছিলাম, সম্মুখে দেখিলাম যে সেই গহনার বাক্সটি রহিয়াছে। পরে শুনিলাম যে, ঘটকীর পরামর্শে সন্ন্যাসী এই গহনার বাক্স সঙ্গে আনিয়াছিল। এখন বিবাহ-বাড়ীতে যাইতে হইবে। কিন্তু নিকটে জনপ্ৰাণী ছিল না। একেলা বিবাহবাড়ীতে যাইতে পারি না। গাড়ী হইতে নামিলাম। পথ হইতে একটি ঢোল লইয়া নিজেই ঢ্যাং ঢ্যাং করিয়া বাজাইতে লাগিলাম। যে তিন চারি জন্য ঢাকী ঢুলী বাঘ দেখিয়া কিছুক্ষণ চাহিয়া তাহারা উঠিয়া বসিলা। অন্য বাদ্যকর কেহ আসিল না। পরে শুনিলাম যে, তাহারা প্ৰাণপণে দৌড়িয়া একেবারে কলিকাতা গিয়া তবে নিশ্বাস ফেলিয়াছিল। ভালই হইয়াছিল। তাহাদিগকে টাকা দিতে হয় নাই। বিবাহের পর দিন, কন্যা লইয়া যখন নিজ গ্রামে আমি প্রত্যাগমন করি, তখন তাহাদের যন্ত্রগুলি আমি কুড়াইয়া আনিয়াছিলাম। কিছুদিন পরে যখন তাহারা আসিল, তখন অনেক কষ্টে আমার নিকট হইতে যন্ত্রগুলি বাহির করিল। টাকা আর চাহিবে কোন লজ্জায়? আমার কেনারাম চাকর ও দুই চারিজন বরযাত্রী ক্রমে আসিয়া জুটিল। প্রথম তাহারা মনে করিয়াছিল যে, নিকটে মানুষ আনিবার নিমিত্ত বাঘ স্বয়ং ঢোল বাজাইতেছে। যাহা হাইক, সেই দুই চারি জন বরযাত্রী ও দুই চারিজন বাদ্যকর লইয়া আমি বিবাহ-বাড়ীতে উপস্থিত হইলাম। অধিক কথায় প্রয়ােজন কি? প্রথম তাে কন্যা সম্প্রদষ্ট হইল। তাহার পর আমাকে সকলে ছাদনাতলায় লইয়া গেল। এক পাল স্ত্রীলোক য়া আমাকে ঘিরিয়া দাঁড়াইল। তাড়কা রাক্ষসীর মত এক মাগী প্ৰথম আমার এক য়া দিল, আর বলিল,- “বিবাহ তৃতীয় পক্ষে, সে কেবল পিত্ত রক্ষে।” পুনরায় আঁর এক কান মলিয়া বলিল,— “বিবাহ তৃতীয় পক্ষে, সে কেবল পিত্তি রক্ষে।” এ একবার এ কান একবার সে কান মালিতে লাগিল এবং ঐ কথা বলিতে লাগিল। মাগীয় হাত কি কড়া। আমি মনে করিলাম যে, সীড়াশি দিয়া বুঝি আমার কান ছিড়িয়া লইতেছে। তার দেখাদেখি, নয় দশ বৎসরের একটা ফচকে ছুড়ি ডিঙ্গি দিয়া আমার কান টানিতে লাগিল আর ঐ কথা বলিতে লাগিল । আমার আর সহ্য হইল। না। আমি বলিলাম,- “নে নে! তোর আর অন্ত ফচকুমিতে কাজ নাই, আমি তোর পিতে মোর বয়সি ” কিন্তু এই সময়ে আবার এক বিপত্তি ঘটিল। বরণ-ডালা হন্তে আমার শাশুড়ী ঠাকুরাণী বরণ করিতে আসিলেন। আমার মুখপানে একবার কটাক্ষ করিয়াই তিনি অজ্ঞান! বরণ-ডালা ফেলিয়া, কন্যার হাত ধরিয়া, প্রাঙ্গণের এক পার্শ্বে গিয়া মাটীর উপর তিনি শুইয়া পড়িলেন। সেই স্থানে শুইয়া উচ্চৈঃস্বরে কাঁদিতে লাগিলেন। কান্নার সুরে তিনি বলিলেন, — “ও গো, মা গো, ও পোড়া বান্দরের হাতে তোরে কি করিয়া দিব গো! ও গো মা গো! ও বুড়ো ডেকরার হাতে কি করিয়া তোকে দিব গো! ঘরে যে কালীঘাটের কালীর পট আছে, যা এক পয়সা দিয়া কিনিয়াছিলাম, তার মত তোর যে মুখখানি গো! তুই যে আমার কেলেসোনা গো!” ইত্যাদি। কালীঘাটের পটের মত মুখ বটে! কন্যাকে বাড়ী আনিয়া যখন ভাল করিয়া প্রথম তাহার মুখ দেখিলাম, তখন আমার মনে হইল যে, ইনি মানুষ নহে, কালীঘাটে মা কালীর বাচ্ছা। হুড়তে পুড়তে এই সময় ঘটকী আসিয়া সেই স্থানে উপস্থিত হইল। ঘটকী বলিল,-“শীঘ্র ጫእ8 sig oriż35 gigs Re! ay www.amarboi.com%97'oro"**********