পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপকার হইয়াছিল। আমি বুঝিয়াছিলাম যে, টাকা উপাৰ্জ্জন করিলেই টাকা থাকে না; টাকা খরচ না করিলেই টাকা থাকে। আমার বােধ হয় রাক্ষসগণ। আমার যখন পঁচিশ বৎসর বয়স, তখন আমার প্রথম গৃহিণীর কাল হইল। তাহার সন্তানাদি হয় নাই। তাহার পর দশ বৎসর। পৰ্যন্ত আমার আর বিবাহ হইল। না। আমার অবস্থা সেই; লোকে বিবাহ দিবে কেন? এই সময় পাশের বাড়ী আমাদের এক স্বজাতি ভাড়া লইলেন। তাহার নাম প্ৰহাদ সেন । দোতলায় সপরিবারে তিনি বাস করিলেন। একজন আত্মীয়কে নীচের দুইটি ঘর ভাড়া দিলেন। তাহার নাম গোলোক দে। প্ৰহলাদ বাবু কোন বণিকের আফিসে কাজ করিতেন। অবস্থা নিতান্ত মন্দ ছিল না, তবে টাকাকড়ি কি গহনা-পত্ৰ কিছু ছিল না। গোলোক বাবু সরকারী আফিসে অল্প টাকা বেতনে কেরাণিগিরি করিতেন। তাহার পুত্র পশ্চিমে কোথায় কাজ করিতেন, কলিকাতায় তিনি ও তাঁহার গৃহিণী থাকিতেন। প্ৰহাদবাবুর গৃহিণী, তাঁহার মাতা, এক বিধবা ভগিনী, দুই শিশুপুত্র ও এক কন্যা, তাঁহার পরিবার এই ছিল। এই সময়ে কন্যাটির বয়স দশ কি এগার ছিল । আমি তাহাকে যখন প্ৰথম দেখিলাম, তখন অকস্মাৎ আমার মনে উদয় হইল-কে যেন আমার কানে কানে বলিয়া দিল যে,-ডমরুধর। এই কন্যাটি তোমার দ্বিতীয় পক্ষ হইবে। তোমার জন্যই বিধাতা ইহাকে সৃষ্টি করিয়াছেন। কিন্তু কি করিয়া কন্যার পিতার নিকট কথা উত্থাপন করি? বয়স তখন আমার পয়ত্রিশ বৎসর, রূপ আমার এই, অবস্থা আমার এই কথা উত্থাপন করিলে তিনি হয়ত হাসিয়া উড়াইয়া দিবেন। কিন্তু বিধাতার ভবিতব্য ত পারে? এই সময় এক ঘটনা ঘটিল, কন্যাটি নিদারুণ রোগ দ্বারা আক্রান্ত এই সূত্রে পাশের বাড়ীতে আমি যাওয়াআসা করিতে লাগিলাম । “আপনার কন্যা কেমন আছে?” দুইবেল প্ৰহাদবাবুকে সেই কথা জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলাম । র জন্য কিছু কাজকৰ্ম্মও করিতে লাগিলাম। প্রয়োজন হইলে ঔষধ আনিয়া ও ডাক্তারের বাড়ী যাইতাম । নিজের পয়সা দিয়া তিনবার কন্যাটিকেও দেখিলাম। কন্যাটির রূপ ছিল না, তথাপি তাহাকে দেখিয়া আমার মন আরও মোহিত হইয়া গেল। এইরূপ আত্মীয়তার গুণে প্ৰহাদবাবুর সহিত আমার অনেকটা সীেহাদর্ঘ্য জন্মিল। শুনিলাম যে, কন্যাটির নাম মালতী। কেমন সুন্দর নাম দেখিয়াছ? নামটি শুনিলে কান জুড়ায় । ভগবানের কৃপায় মালতী আরোগ্যলাভ করিল। আমাদের ঝিকে মাঝে মাঝে দুই-একটি সন্দেশ, দুই-একটি রসগোল্লা, দুই-একখানি জিলেপি দিয়া বশ করিলাম, ক্ৰমে তাহার দ্বারা প্ৰহাদবাবুর মাতা, স্ত্রী ও বিধবা ভগিনীর নিকট কথা উত্থাপন করিলাম। প্ৰহাদবাবুর ভগিনী সংসারের কত্রী। যা বলিয়াছিলাম,- সে কথা তিনি হাসিয়া উড়াইয়া দিলেন। তিনি বলিলেন,- “কি ! ঐ জলার ভূতটার সঙ্গে মালতীর বিবাহ দিব? পোড়া কপাল!” কিন্তু কন্যার বিবাহের নিমিত্ত প্ৰহাদবাবু বিব্রত ছিলেন। তাঁহার টাকা ছিল না। কি করিয়া কন্যাদায় হইতে তিনি উদ্ধার হইবেন, সৰ্ব্বদাই তাহা ভাবিতেছিলেন। সুতরাং ঝি যে প্রস্তাব করিয়াছিল, সম্পূর্ণরূপে তিনি তাহা অগ্রাহ্য করিলেন না। তিনি বলিলেন,— “পুরুষমানুষের পক্ষে পয়ত্রিশ বৎসর বয়স কিছু অধিক নহে। তাহার পর রূপে কি করে গুণ থাকিলেই হইল। মালতীর পড়ার সময় সে আমাদের অনেক উপকার করিয়াছে। তাহাতে বোধ হয যে, ডমরুধর sy দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comািকস্তানাথ ********