পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহাদের উপর আমি রাগিয়া উঠিলাম যে,- “আমাকে আপনারা চোর বলেন!! আপনারা ভাল মানুষ নহেন।” ইত্যাদি। ক্রমে কথা আমার মনিব হর ঘোষের কানে উঠিল। মোহর ফিরিয়া দিতে তিনিও আমাকে অনেক অনুরোধ করিলেন। আমি তাঁহাকে বলিলাম,- “মহাশয়! আজি কয়েক বৎসর আপনার দোকানে কাজ করিতেছি, আর কয় বৎসর। আপনার বাটীতে বাস করিতেছি। একটা পয়সা কখন কি আপনার লইয়াছি? আমার প্রতি সন্দেহ হয় এমন কাজ কখন কি আমি করিয়াছি?” দিনকয়েক বিলক্ষণ গোল চলিল। দেখ, লম্বোদর! মানুষ হাজার বুদ্ধিমান হউক, এরূপ কাজে একটা-না-একটা ভুল করে। আমিও তাঁহাই করিয়াছিলাম। এ অনেক দিনের কথা হইল, এখন আর প্রকাশ করিতে দােষ নাই। প্রকৃত ঘটনা এই হইয়াছিল, —মশার দীেরাত্ম্যে রাত্ৰিতে আমার নিদ্রা হইত না। অনেক কষ্টে পাঁচসিকা দিয়া একটি মশারি কিনিয়াছিলাম। মশারিটি খাটাইবার নিমিত্ত দেওয়ালে একদিন পেরেক মারিতেছিলাম। পেরেক মারিতে হঠাৎ দেওয়ালের কতকটা বালি ভাঙ্গিয়া পড়িল। সেই স্থানটিতে একটি ছিদ্ৰ হইল। ছিদ্রের ভিতর আমি হাত দিলাম। হাতে কি এক ভারী দ্রব্য ঠেকিয়া গেল। বাহির করিয়া দেখিলাম যে, মোহরপূর্ণ এক বগুলি। তৎক্ষণাৎ আমি আমার ঘরের দ্বার বন্ধ করিয়া দিলাম। তাহার পর পুনরায় গৰ্ত্তের ভিতর হাত দিয়া দেখিলাম যে, তাহার অপর পার্শ্বে কাঠ, হাতে সেই কাঠ ঠেকিয়া গেল। তখন ইহার অর্থ কিছু বুঝিতে পারিলাম না। কিন্তু তাহার পর প্রকাশ হইল যে, আমার ঘরের ও গােলোকবাবুর ঘরের এক প্রাচীর, প্রাচীরের অপর পার্শ্বে গােলোকবাবুর ঘরে আলমারি, আমার হাতে আলমারির কপাট NIC বলা বাহুল্য যে মোহরগুলি পাইয়া আমার হইল। চুপি চুপি সেইগুলি গণিতে লাগিলাম। পাছে শব্দ হয়, সেজন্য একটি করিয়া গণিলাম একশত মোহর। চিরকাল পরিশ্রম করিলেও কখন আমি এত করিতে পারিতাম না। দেখিলাম যে, এ সেকালের মোহর নহে, বিলাতি লোকে গিনি বলে। পরদিন একটু বালি ও চূণ আনিয়া দেওয়ালের ছিদ্রটি দিলাম। তাহার পর বাজারে গিয়া মোহরগুলি বিক্রয় করিলাম। পনেরশত টাকার অধিক হইল। দেশে গিয়া তেরশত টাকা কোন এক নিভৃত স্থানে পুঁতিয়া রাখিলাম। বিবাহের নিমিত্ত বাকী টাকা কাছে রাখিয়া দিলাম। মোহর যে গিয়াছে, ভাগ্যে গোলোকবাবু ছয় মাস পৰ্যন্ত দেখেন নাই। যে সময় মোহর হস্তগত হইয়াছিল, সে সময় যদি তিনি খোজ করিতেন, তাহা হইলে আমার আর বিবাহ হইত না। বলিতেছিলাম যে, এই মোহর সম্বন্ধে আমি একটি ভুল করিয়াছিলাম। বড়বাজারে আমাদের কাপড়ের দোকানের পার্শ্বে এক পোদারের দোকান ছিল। সেই দোকানে আমি মোহরগুলি বিক্রয় করিয়াছিলাম। একটু দূরে গিয়া যদি এ কাজ করিতাম, তাহা হইলে আর বিশেষ কোন গণ্ডগোল হইত না। পাশেই দোকান, সেজন্য পোদারের সঙ্গে কথাপ্রসঙ্গে আমার মনিব হর ঘোষ মহাশয় আমি যে মোহর বেচিয়াছিলাম, তাহা জানিতে পারিলেন। প্ৰহাদবাবুকে তিনি বলিয়া দিলেন। সকলে জটলা করিয়া আমাকে মোহর বিক্রয়ের টাকা গোলোকবাবুকে দিতে বলিলেন। আমি বলিলাম যে,- “এ মোহর আমার মায়ের ছিল। মৃত্যুকালে মা আমাকে দিয়া গিয়াছিলেন। বিবাহে ও অন্যান্য বিষয়ে মোহর বিক্রয়ের টাকা আমি খরচ করিয়া ফেলিয়াছি। সে টাকা এখন আমি কোথায় পাইব, আর যদি থাকিত, তাহা হইলে কেনই বা দিব?” অবশ্য আমার একথা তােহাৱা বিশ্বাস করিলেন না। যখন নিতান্ত আমার নিকট হইতে ডমরু-চরিত sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro toS