পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লম্বোদর বলিলেন, — “আবার বুঝি একটা আজগুবি গল্প হইবে?” ডমরুধর রাগিয়া বলিলেন, — “তোমার যদি শুনতে ইচ্ছা না থাকে, তাহা হইলে কানে আঙ্গুল দিয়া থাক।” তাহার পর পাঁচজনের অনুরোধে ডমরুধর এইরূপে গল্পটি বলিতে লাগিলেন, — গত বৎসর নবমী পূজার দিন। রাত্রি শেষ হইয়াছ। বাহির-বাড়ীতে কিরূপ একটা খুটখােট শব্দ হইতে লাগিল। দু’পয়সা আমার সঙ্গতি আছে। কাজেই আমাকে সৰ্ব্বদা সতর্ক ও শঙ্কিত থাকিতে হয়। আমি ধীরে ধীরে বাহিরে আসিয়া দেখি যে দালানের প্রতিমার সম্মুখে একটা বিকটাকার মর্দা পূজার সমুদয় দ্রব্যাদি লইয়া গাঠরি বঁাধিতেছে। পূজার সমুদয় উপকরণ যাহা তখন দালানে ছিল, মায় বেশ্যাবাড়ীর মৃত্তিকাটুকু পৰ্যন্ত, সমস্ত দ্রব্য সে বঁাধিয়া লইতেছে। তাহার নিকটে একটা ত্ৰিশূল পড়িয়া ছিল। বুচকি বঁধিয়া ত্ৰিশূলের আগায় আটকাইয়া সে কাঁধে তুলিবার উপক্ৰম করিল। রাগে আমার সাৰ্ব্বশরীর জুলিয়া উঠিল। পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি যে, অবতার হইলে দেবতাদের আত্মবিস্মৃতি হয়। আমি যে ভগবতীর পুত্র কীৰ্ত্তিক, রাগের ধমকে সে কথা একেবারে ভুলিয়া যাইলাম। সেই লোকটাকে গালি দিয়া আমি বলিলাম,- “বদমায়েস চােৱা! পূজার দ্রব্য চুরি করিতেছি সু।” সে লোকটা একবার আমার মুখের দিকে চাহিয়া দেখিল। পোটলার একদিক ধরিয়া আমি টানিতে লাগিলাম। ঈষৎ হাসিয়া পোটলার অপর দিক্‌ ধরিয়া সে টানিতে লাগিল। আমি তাহাকে বলিলাম,- “পোটিলা ছাড়িয়া দে।” সে উত্তর ನ್ತಃ কালীঘাটের কুকুর হয়।” আমি বলিলাম,- “কৰ্ব্বেংসেঁকে এ সব জিনিষ আমি দিয়াছি?” পারিলাম না। অবশেষে হতাশ হইয়া তুগৃহদ্ভুক্তই সে লোকটি বলিল,— “ছি! তোমাক্ত এখনও দুষ্টুমি যায় নাই। দেবতারা পৃথিবীতে আসিয়া পুনরায় ফিরিয়া যাইতে ইচ্ছা করেন না। ইন্দ্র শূকর হইয়া ছানা-পোনা লইয়া সুখে কালব্যাপন করিতেছিলেন। অনেক সাধ-সাধনা করিয়া পুনরায় তাহাকে স্বৰ্গে লইয়া যাইতে হইয়াছিল। রামচন্দ্রকে অনেক কৌশল করিয়া বৈকুণ্ঠে লইয়া যাইতে হইয়াছিল। শ্ৰীকৃষ্ণের পুত্রপৌত্রদিগের পদভরে মেদিনী টলটিলায়মানা হইয়াছিল। আমার বাবাঠাকুরও অতি কষ্টে বলিয়াছিল,— ‘দুই শরা জল ছোিচয়া কোমরে দিলে হাত । এমনি করিয়া খাবে তুমি কোচিনী পাড়ার ভাত?” কৈলাসের মা আমার কাদিয়া কাটিয়া কুরুক্ষেত্ৰ করিয়াছিলেন। অনেক কষ্টে বাবাকে আমরা পুনরায় স্বস্থানে লইয়া গিয়াছিলাম। দাদাঠাকুর, তোমাকেও একটু কষ্ট দিতে হইবে, তবে তোমার বিবাহের সাধ মিটবে। সেজন্য আমি তোমাকে অভিশাপ দিতেছি,-ছয় মাস কাল তুমি সম্পূর্ণ আত্মবিস্মৃত হইয়া থাকিবে। ছয় মাস কাল তুমি নানা বিপদে পতিত হইবে। তুমি যেমন ফোকলা মুখে আমার হাতে কামড় মারিলে, সেইরূপ আর একজনের কামড় মারিয়া তোমার প্রাণ ওষ্ঠাগত হইবে। byy দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.com%ি"********