পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিল,- “ডমরুধর।” পুনরায় অপর আমি এ দিকের আমিকে সেই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিল। সেও এইরূপ উত্তর করিল, ফলকথা, এ আমিও যা বলে, ও আমিও তাই করে ও তাই বলে । তখন আমার সকল কথা হৃদয়ঙ্গম হইল। সেবার সন্ন্যাসী-সঙ্কটে আমার লিঙ্গশরীর বাহির হইয়া যমালয়ে গিয়াছিল। শুনিয়াছি যে, আমাদের শরীর অন্নময় কোষ,প্ৰাণময় কোষ, মনোময় কোষ প্রভৃতি কয়েকটি কোষ দ্বারা গঠিত। একবার লিঙ্গশরীর বাহির হইয়াছিল বলিয়া কোষগুলির বাঁধন কিছু আলগা হইয়া গিয়াছিল। সেজন্য দুই একটি কোষ বাহির হইয়া আর একটি ডমরুধারের সৃষ্টি হইয়াছে। এখন উপায় কি? লোকে একটা আমির ভাত-কাপড় যোগাইতে পারে না। তা যোগাইবার যেন আমার সঙ্গতি আছে, কিন্তু একটা আমির পেট কামড়াইলে লোক ব্যতিব্যস্ত হইয়া পড়ে। একসঙ্গে দুইটা আমির পেট যদি কামড়ায়, তখন আমি কি করিব? একটা আমি অপরটাকে বলিল,- “তুই চলিয়া যা, আমি প্রকৃত ডমরুধর, তুই জাল ডমরুধর ।” অপরটাও সেই সেই কথা বলিল। দুই আমিতে ঘোরতর কলহ উপস্থিত হইল। ক্রমে হাতাহাতি হইবার উপক্রম হইল। এমন সময় প্রভাত হইল! প্ৰভাত হইবামাত্র আমি একটা হইয়া যাইলাম। তখন আমার ধড়ে প্ৰাণ আসিল । পাছে পুনরায় দুইটা হইয়া যাই, সেই দুশ্চিন্তায় সমস্ত দিন আমি মগ্ন রহিলাম। বিজয়ী দশমীর পূজার পর পুরোহিতষ্ঠাকুর যখন আমাকে মন্ত্র পড়াইলেন,-আয়ুৰ্দেহি যশো দেহি ভাগ্যং ভগবতি দেহি মে,- তখন আমার সুবল কুক্‌থা মনে পড়ল। দুর্গোৎসব করিয়া, ভক্তিতে গদগদ হইয়া সুবল নিজেই ঠাকুরের সম্মুখেঞ্জীৰ্ণপণ যতনে শঙ্খ বাজাইলেন। শঙ্খ বাজাইতে গিয়া সুবলের গোগগোল বাহির তাই রক্ষা কর৷” প্রতিমা বিসৰ্জ্জন হইয়া গেল। সন্ধ্যার সময় আমি এক সহস্ৰ দুৰ্গানাম লিখিলাম। পাড়ার ছেলেরা আমাকে নমস্কার করিয়া গেল । আহারাদি করিয়া যথাসময়ে দোতলায় আমার ঘরে গিয়া শয়ন করিলাম। সিদ্ধি খাইয়া শরীর একটু গরম হইয়াছিল। সেজন্য আমার নিদ্রা হইল না। বিছানা হইতে উঠিয়া জানালার ধারে দাঁড়াইলাম। জ্যোৎস্না রাত্রি। বাড়ীর বাহিরে বাগানে আমার জানালার নীচে ও কে দাড়াইয়া রহিয়াছে? সেই আর একটা আমি! হাত নাড়িয়া তাহাকে আমি বলিলাম,- “যা, চলিয়া যা!” নীচের আমিও উপরের আমিকে সেই কথা বলিল। উপরের আমি নীচে নামিলাম। খিড়কিদ্বার খুলিয়া আমি বাগানে যাইলাম। ওমা দেখি না নীচের আমিটা উপরে গিয়া ঠিক আমার ঘরের জানালার ধারে দাঁড়াইয়া আছে। এ আমিটা একবার উপরে, একবার নীচে, ও আমিটা একবার উপরে, একবার নীচে, কতবার যে এইরূপ হইল, তাহা বলিতে পারি না। তৃতীয় পক্ষে এলোকেশীর সহিত আমার কি প্রকারে বিবাহ হইয়াছিল, গত বৎসর সে কথা তোমাদের নিকট বলিয়াছি। আমি এলোেকশীকে জাগাইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম,- “এইমাত্র যখন আমি নীচে গিয়াছিলাম, তখন তোমার ঘরে আর একটা কে আসিয়াছিল।” এলোকেশী বলিল,— “মুখপোড়া, বুড়ো ডেকর! এখনি ঝাটাপেটা করিব।” -se sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro br.Sእ»