পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তোমারও যে — ঘরে গৌতম বাহিরে গৌতম।” এই কথা বলিবামাত্র এলোকেশীর সর্বশরীর রাগে জুলিয়া উঠিল। নিকটে এক মুড়া ঝাড়ু পড়িয়াছিল। তাহা লইয়া এলোকেশী আমাকে সবলে প্রহার করিতে লাগিল। আমার সৰ্ব্বশরীরে যেন বিষের জ্বালা ধরিল। গায়ে খেঙ্গরাকাটি ফুটিয়া যাইতে লাগিল। “আর নয়, আর নয়” বলিয়া আমি যত চীৎকার করি, এলোকেশী ততই আমাকে প্রহার করে। মাথার টাক হইতে পায়ের নখ পৰ্যন্ত প্ৰহারের চোটে ক্ষতবিক্ষত হইল। কিন্তু এই দুঃখের সময় এক সুখের বিষয় হইল। জানােলা দিয়া একবার নীচের দিকে চাহিয়া দেখিলাম যে, সেই বাগানের আমিও বাঁটার আঘাতে ব্যথিত হইয়া গায়ে হাত বুলাইতেছি। তাহার পর দেখি না যে, দুই আমি একসঙ্গে ঘরের ভিতর রহিয়াছি। তাহার পর দেখি না যে, একটি আমি আরব্য উপন্যাসের দৈত্যের ন্যায় ধোঁয়ার মত হইয়া গেল। তাহার পর সেই ধুমটি সোৎ করিয়া আমার নাকের ভিতর প্রবেশ করিল। এতদিন আমি দুইখানা হইয়াছিলাম। আজ এলোকেশীর বাটার আঘাতে পুনরায় আমি একখানা হইলাম। এলোকেশীর এই অমানুষিক কাজ দেখিয়া আমি ঘোরতর বিস্মিত হইলাম। প্ৰহারের জ্বালা আমি ভুলিয়া যাইলাম। গলায় কাপড় দিয়া যোড়হাতে এলোকেশীর পায়ে পড়িয়া আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “মা, তুমি কে বল?” (^ আমার এইরূপ বিনয়বাক্যে এলোকেশী কিছুমাত্ৰ সন্তুষ্ট হইল না। দ্বিগুণভাবে পুনরায় প্রহার আরম্ভ করিল। এই প্ৰহারে আর একটি আমার উপকার হইল। নদীর অভিশাপ মোচন হইয়া গেল। আমার আত্মবিস্মৃতি কিয়ৎপরিমাণে ঘুচিয়া গেল। আমি কে, তখন বুঝিতে পারিলাম। যোড়হাতে তখন আমি মা দুৰ্গাকে ডাকিতে লাগিলাম,- “মা! আমি অপরাধ করিয়াছি। বিবাহের সাধ আমার মিটিয়া গিয়াছে। আর বাটা-পেটা সইতে পারি না। আমাকে কৈলাস পৰ্ব্বতে লইয়া চল। সেস্থানে চিরকাল আমি আইবুড়ো হইয়া থাকিব। চামুণ্ডারূপিণী। এলোকেশীর সহিত আর আমি সংসারধৰ্ম্ম করিতে চাই না।” মা কোন উত্তর দিলেন না। আমি শুনিয়াছিলাম যে, শৈশবকালে কৃত্তিকা প্রভৃতি ছয়টি নক্ষত্র আমাকে প্রতিপালন করিয়াছিলেন। এখন আমি তাহাদিগকে ডাকিতে লাগিলাম। আমি বলিলাম,- “জননীগণ! যখন নিঃসহায় অবস্থায় শরবনে আমি পড়িয়াছিলাম, তখন তোমরা আমাকে রক্ষা করিয়াছিলো। ছয়জনের স্তন্যপান করিবার নিমিত্ত ছয়টি মুখ আমি বাহির করিয়াছিলাম। দুৰ্দান্ত এলোকেশীর খেঙ্গরার প্রহার আর আমি সহ্য করিতে পারি না। আমার শরীর জরজর হইয়া গেল। তোমরা আমাকে রক্ষা কর।” আশ্চর্য্যের কথা বলিব কি ভাই, তৎক্ষণাৎ আকাশবাণী হইল,— “পৃথিবীতে তোমার আরও একশত বৎসর পরমায়ু আছে। বৎস! সুখে এই স্থানে এখন থাক। আরও একশত বৎসর ডমরু-চরিত ԵrՀՓ sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro