পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহার পর আমার স্ত্রী এলোকেশী আসিলেন। তিনি বলিলেন, — “ঘরে চল! না গেলে এখনি কান ধরিয়া লইয়া যাইব ।” তোমরা সকলেই জান যে, এলোকেশীকে আমি যমের মত ভয় করি। তাঁহার কণ্ঠস্বর শুনিয়া প্রথম আমার হৃৎকম্প হইয়াছিল। কিন্তু আমার স্মরণ হইল। যে, এসব মিথ্যা। তখন আমি পুনরায় ধ্যানে প্ৰবৃত্ত হইলাম। আমার সে কঠোর তপ যখন কেহ কিছুতেই ভঙ্গ করিতে পারিল না, তখন মা দুৰ্গা স্বয়ং আসিয়া উপস্থিত হইলেন। মা বলিলেন,- “ডমরুধর! তোমার কঠোর তপস্যায় আমি সন্তোষ লাভ করিয়াছি। এক্ষণে বর প্রার্থনা কর।” আমি চক্ষু চাহিয়া দেখিলাম যে, ঠিক যেমন এই প্রতিমা, দেবী সেই বেশে আমার নিকট আগমন করিয়াছেন। মা দশভুজা, দক্ষিণে গণেশ ও লক্ষ্মী, বামে সরস্বতী ও কাৰ্ত্তিক, নিম্নে সিংহ অসুর। মায়ের সেই উজ্জ্বল রূপ দেখিয়া আমি হতবুদ্ধি হইয়া পড়িলাম। চারিদিক আঁধার দেখিতে লাগিলাম। মনের উপরও যেন ছানি পড়িয়া গেল। কিন্তু বর চাহিব, তাহা খুঁজিয়া পাইলাম না। আমার দূরদৃষ্ট! তা না হইলে কাছে লক্ষ্মী ছিলেন। যদি ধন চাহিতাম, এত ধন তিনি দিতেন যে, রাখিতে ঘরে স্থান হইত না। কাছে সরস্বতী ছিলেন, যদি বিদ্যা চাহিতাম, তাহা হইলে আমিও একটা বি-এ, এম-এ পাস করা ফোচকে ছোড়া হইতে পারিতাম। কিন্তু সে জ্ঞান আমার হইল না। কাৰ্ত্তিকের ময়ুরটি দেখিয়া আকাশ-ভ্রমণের সাধ আমার মূল উদয় স্থূল ভূমি বুলিলাম। যদি বহু দুই, ভূবে কার্ভিকের ময়ূরািট আমাকে প্রদান কর। উহার পিঠে চড়িয়া আমি আকাশ-ভ্ৰমণ করিব6 দেবী বলিলেন,— “ছি বাছা, ও কথা বলিও ৰা! ছেলেমানুষ। তাহার ময়ুরটি দিলে সে কাদিবে।” ஜூ আমি উত্তর করিলাম,- “অন্য না মা! নিদেন সকাল হইতে সন্ধ্যা পৰ্যন্ত একদিনের জন্য ময়ুরটিকে দাও, মাৰ্চ ১ পিঠে চড়িয়া সমস্ত দিন আকাশ-ভ্ৰমণ করিয়া সন্ধ্যাবেলা তোমাদের ময়ুর তোমাদিগকে ফিরাইয়া দিব। যদি না দাও, তবে পুনরায় আমি এই তপে বসিলাম ।” দেবীর ভয় হইল। তিনি বলিলেন, — “না বাছা! আর তপস্যা করিও না। তোমার তপে পৃথিবী তাপিত হইয়াছে। আর তপ করিলে মহাপ্রলয়ের অনল উত্থিত হইয়া সমস্ত জগৎ ভষ্ম হইয়া যাইবে।” এই কথা বলিয়া কাৰ্ত্তিকের সহিত দেবী চুপি চুপি কি পরামর্শ করিলেন। তাহার পর তিনি বলিলেন,- “আচ্ছা বাছা, একদিনের জন্য কাৰ্ত্তিক তোমাকে ময়ুরটি প্রদান করবে। আমার সিংহের একটি বাচ্চা দিয়া কাৰ্ত্তিককে আমি ভুলইয়া রাখিব। কিন্তু ডমরুধর! সন্ধ্যা হইলেই ময়ুরকে তুমি ছাড়িয়া দিবে। না ছাড়িয়া দিলে, সে তোমাকে লবণ, ইক্ষুরস, সুরা, ঘূত, ক্ষীর, দধিসমুদ্র পারে স্বাদুসমুদ্রে লইয়া ফেলিবে । সে সমুদ্রে তুমি হাবুডুবু খাইয়া মরিবে।” এইরূপ সাবধান করিয়া দেবী আমাকে ময়ূরাটি প্রদান করিলেন। কাৰ্ত্তিককে সিংহশাবক দিলেন। সিংহের বাচ্চাটি কোলে লইয়া কাৰ্ত্তিক কৈলাসে গমন করিলেন । প্রতিমায় যেরূপ গঠিত হয়, কাৰ্ত্তিকের ময়ুর প্রকৃত সেরূপ নহে। সে ময়ূর কিরূপ, খড়ি দিয়া এই শানের উপর আমি তোমাদিগকে আকিয়া দেখাই। ময়ূরের ছবি দেখিতে সকলে তাঁহার উপর ঝুকিয়া পড়িলেন। ছবি দেখিয়া লম্বোদর উ***** দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.com ~ brSసి