পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিলাম যে, চুপি চুপি দুর্লভীকে দেখাইয়া আসি,-যেন এলোকেশী জানিতে না পারেন। দুর্লভীর ঘরে গিয়া দেখিলাম যে, সে কয়দিন জুরে পড়িয়া আছে। তাহার বোন-বিস্তু সেবা করিতে আসিয়াছে। বােন-ঝির নাম চঞ্চলা। পাঁচ ক্রোশ দূরে ঝিঝিরডাঙ্গা নামক গ্রামে তাদের বাস। সে বিধবা । বয়স প্রায় ত্রিশ। রং কালো বটে, কিন্তু দেখিতে মন্দ নহে। আমি মনে করিলাম, ইহার সহিত ডাব করিতে হইবে। তাহা করিলে দুর্লভীর হিংসা হইবে। আমার উপর আর তাহার রাগ থাকিবে না। রং ফরসা হইবার জন্য শঙ্কর ঘোষ আমাকে যে ঔষধ বিক্রয় করিয়াছিল, তাহা আমি ব্যবহার করি নাই। সেই ঔষধ দুর্লভীকে আমি খাইতে দিলাম। তাহা খাইয়া দুর্লভীর পেট ছাড়িয়া দিল, দুর্লভী মৃতপ্রায় হইল। গ্রামের সকলে আমাকে ছিছি করিতে লাগিল। পুলিশে সংবাদ দিবে বলিয়া কেষ্টার বাপ আমাকে ভয় দেখাইল । চঞ্চলা বলিল যে, তাহাদের গ্রামে ভিকু ডাক্তার নামক এক ভাল চিকিৎসক আছেন, তাঁহাকে আনিলে তাহার মাসী ভাল হইবে। আমার ঔষধ খাইয়া দুর্লভীর প্রাণ যাইতে বসিয়াছে, সেজন্য ভয়ে আমি খরচ দিতে সম্মত হইলাম। ব্যাগ হাতে করিয়া পাঁচ ক্রোশ দূরে ঝিঝিরডাঙ্গা হইতে ভিকু ডাক্তার পদব্ৰজে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। ইনি হােমিওপ্যাথিক ঔষধ প্ৰদান করেন। শুনিলাম যে, ভিকু কলিকাতায় কোন ডাক্তারখানায় ছয় মাস কম্পাউণ্ডারি করিয়াছিলেন। একবার কোন রোগীকে কৃমির ঔষধের পরিবৰ্ত্তে কুচিলা বিষ প্ৰদান করিয়াছিলেন। রোগীর তাহাতে মৃত্যু হইয়াছিল। সেজন্য ভিকুর ছয় মাস কারাবৃষ হইয়াছিল। এইরূপ অভিজ্ঞতা লাভ করিয়া ডিকু এখন স্বগ্রামে আসিয়া ডাক্তার হইয়াছেন,6) ভিকুর বয়স চল্লিশের অধিক। শরীর রং ময়লা, তবে কালো নহে। সচরাচর হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের বিশেষতঃ যেরূপ হয়, ভিকুর মুখ দিয়াও সেইরূপ চড়বড় করিয়া কথার যেন খৈ ফুটিতে দুর্লভীকে দেখিয়া ভিকু বলিলেন,- “কোন ভয় নাই, সরিষাপ্রমাণ এক বড়িতে ভাল করিব। এ বা কি রোগ! আমি কত অসাধ্য রোগ ভাল করিয়াছি। কত মরা জীবন প্ৰদান করিয়াছি।” এইরূপ ভূমিকা করিয়া ভিকু নিজের বিদ্যার পরিচয় দিতে আরম্ভ করিলেন। ভিকু বলিলেন, — “নেহালা গ্রামের ত্ৰিলোচন সরকেলের পেট ক্রমে ক্রমে ফুলিতে লাগিল; পেট ফুলিয়া ক্ৰমে জালার মত হইল। কত ডাক্তার কত বৈদ্য আসিল। কেহ বলিল উদরী, কেহ। বলিল টিউমার। কত ঔষধ তিনি খাইলেন। কিছুতে কিছু হইল না। অবশেষে তাহার লোকেরা আমাকে লইয়া গেল। আমি অনেকক্ষণ ধরিয়া বিশেষরূপে পরীক্ষা করিয়া তাহার পেটটি দেখিলাম। অবশেষে তাহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিলাম, তোমাদের ঘরে মাছ ধরিবার সূতা বঁড়শী আছে? তাহারা সূতা বঁড়শী আনিয়া দিল। বঁড়শীতে হােমিওপ্যাথিক গুলির টােপ করিয়া সূতা সহিত রোগীকে গিলিতে বলিলাম। মুখের বাহিরে সূতাটির অপর দিক ধরিয়া আমি একদৃষ্টি তাহার দিক চাহিয়া রহিলাম। সূতা যেই একটু নড়িয়া উঠিল, আর সেই সময় আমি টান মারিলাম। বলিব কি মহাশয়! ধামার মত প্ৰকাণ্ড একটা কচ্ছপ তাহার পেট হইতে আমি বাহির করিলাম। জলের সহিত সামান্য শিশুকচ্ছপ সরকেলমহাশয় ভক্ষণ করিয়াছিলেন। উদরে সেই কচ্ছপ ক্রমে বড় হইয়া তাহার জীবন সংশয় করিয়াছিল। আমার চিকিৎসায় তিনি সুস্থ হইলেন। আর একবার রাত্রি দুপ্ৰহরের সময় আমি ঝিল গ্রামের শশানঘাটের নিকট দিয়া br8br afraig -iibg gis so! - www.amarboicon"37*********