পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ছিপগাছটা আমি ফেলিয়া দিলাম। প্রথম বনের ভিতর দিয়া, তাহার পর পুকুরপারের নীচে দিয়া দুর্লভীর ঘরের পশ্চাৎদিকে উপস্থিত হইলাম। ধীরে ধীরে অগ্রসর হইয়া উকি মারিয়া দেখিলাম যে, তাহার ঘরে কেহ নাই। দ্বারটি কেবল ভেজানো আছে। চুপ করিয়া আমি তাহার ঘরে প্রবেশ করিলাম। ঘরের ভিতর অন্ধকার। চারিদিক চাহিয়া দেখিলাম। একখানি কাপড় কি একখানি গামছা দেখিতে পাইলাম না। কি করি টুপি মাথায় দিয়া উলঙ্গ অবস্থায় ঘরের এককোণে বসিয়া রহিলাম। মনে করিলাম যে একটু অন্ধকার হইলে পলায়ন করিব। আর যদি দুর্লভী দেখিতে পায়, তাহা হইলে আমার সাহেবের পোষাক দেখিয়া তাহার মনে আনন্দ হইবে। ওদিকে যাহা ভাবিয়ছিলাম, তাহাই হইল। গদাই ঘোষ গ্রামের চৌকিদার ও অন্যান্য লোক লইয়া পুষ্করিণীর ধারে উপস্থিত হইল। মহা গোল পড়িয়া গেল। ঘরের ভিতর বসিয়া আমি তাহা শুনিতে পাইলাম। ভয়ে সৰ্ব্বশরীর আমার কঁাপিতে লাগিল। পুকুরের সেই কোণে বনের ভিতর তাহারা অনেক অনুসন্ধান করিল। ছিপ দেখিতে পাইল। কিন্তু সাহেবকে তাহারা দেখিতে পাইল না। হতাশ হইয়া সকলে বাড়ী ফিরিয়া গেল। তখন দুর্লভী আসিয়া আপনার দাওয়া বা পিঁড়িতে বসিল। এমন সময় রসকের মা আসিয়া বলিল,- কৃষ্ণ আমাকে শসা দিবি বলিয়াছিলি, কৈ দে।” (ČS দুর্লভী বলি,—“শসা তুলিয়া রাখিয়াছি। কোণে ডালায় আছে, গিয়া লও।” আমি ঘরের বাম কোণে বসিয়াছিলাম ধর্তেসীমার ভয় হইল। কোণের দিকে আরও ঘোঁসিয়া বসিলাম । রসকের মা ঘরের ভিতর কোণের কাছে অন্ধকারে হাতড়াইতে লাগিল । সহসা বানাৎ করিয়া কি একটা শব্দ । সে চীৎকাৱা করিয়া উঠিল, বাম হােত আমার দিকে বাড়াইয়া দিল। আমার গায়ে তাহার হাত ঠেকিয়া গেল। সে চীৎকার করিয়া বলিতে লাগিল, ঘরের ভিতর একটা ভূত বসিয়া আছে। সে আমার হাতে কামড় মারিয়াছে। আমার আঙ্গুলগুলো চিবাইতেছে। এখন আমার সর্বশরীর খাইয়া ফেলিবে । পরে শুনিলাম, ঘরে যে দুর্লভীর করাতে ইদুরকল পাতিয়া রাখিয়াছিল, রসূকের মায়ের হাত তাহাতে পড়িয়া গিয়াছিল। কি হইয়াছে, কি হইয়াছে বলিয়া দুর্লভী দৌড়িয়া আসিল । দ্বারের নিকট তাহাকে ঠেলিয়া আমি ঘর হইতে বাহির হইয়া পড়িলাম। তখন দুর্লভী আমাকে দেখিতে পাইল। কিন্তু চিনিতে পারিল না। সে চীৎকার করিয়া বলিল,— “ভূত নহে ভূত নহে, এ সেই নেঙটা গোরা; এতক্ষণ নেঙটা গোরা আমার ঘরের ভিতর বসিয়াছিল।” তাহার চীৎকার শুনিয়া চারিদিক হইতে লোক ছুটিয়া আসিতে লাগিল। আমি আর বাটী পলাইতে অবসর পাইলাম না। কিছু আগে পথের বামদিকে বিন্দু ব্ৰাহ্মণীর ঘর। বিন্দু ব্ৰাহ্মণী তখন গোয়ালে বসিয়া ঘুটে ধরাইয়া ধোঁয়া করিতেছিল। তাহার সেই একখানি মেটে ঘরের দ্বার খোলা ছিল। তাড়াতাড়ি আমি সেই ঘরের ভিতর প্রবেশ করিলাম। ঘরের ভিতর মিটমিট করিয়া এক কেরোসিনের ডিবে জুলিতেছিল। বিন্দু ব্ৰাহ্মণীর কেহ। নাই। একলা সে সেই ঘরে বাস করে। তাহার অনেকগুলি নারিকেল, আম, কঁঠাল ও আতা

            • দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.com ~ ኩrG “ስ