পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলিল,- “আমি যোগেশবাবুর সরকার। আমার বাবুর বাড়ীতে এই বালিকার মাসী চাকরাণী ছিল। যোগেশবাবুর স্ত্রী ঘোরতর পীড়িত হইয়াছেন। ইহার মাসী তাঁহার অনেক সেবা করিয়াছিল। যোগেশবাবুর স্ত্রীর কানে দুইটি হীরার টপ ছিল। কিছুদিন পূৰ্ব্বে একটি টপ হারাইয়া গিয়াছিল। ভালরূপ জোড়া মিলাইতে না পারিয়া অপর টপটি তাহার বাক্সতে তিনি ফেলিয়া রাখিয়াছিলেন। পুরস্কারস্বরূপ ইহার মাসীকে তিনি সেই টপটি দিয়াছিলেন। তাহার সোনাটুকু ইহার মাসী বােধ হয় বেচিয়া ফেলিয়াছিল। কাচ মনে করিয়া হীরকখণ্ড শিশির ভিতর ফেলিয়া রাখিয়াছিল। তাহার মূল্য চারিশত টাকা। আপনি দুই পয়সায় তাহা ফাঁকি দিয়া লইয়াছেন। যে টপটি হারাইয়া গিয়াছিল, এক্ষণে তাহা মিলিয়াছে। সেজন্য জোড়া মিলাইবার নিমিত্ত এই বালিকা ও তাহার ভ্রাতাকে চারিশত দিয়া হীরকখণ্ড লইতে বাবু আমাকে প্রেরণ করিয়াছেন। হীরকখণ্ড আপনি আমাকে প্ৰদান করুন।” পয়সা দিয়া কিনিয়াছি, কেন আমি দিব, এইরূপ বলিয়া প্ৰথম আমি দিতে সম্মত হই নাই। কিন্তু পরে বুঝিলাম যে, যোগেশবাবু আমাকে সহজে ছাড়িবেন না। চিরকাল মামলা-মোকদ্দমা করিয়া আসিতেছি। মামলা-মোকদ্দমা আমি বিলক্ষণ জানি। আমি বুঝিলাম যে, মোকদ্দমা হইলে হীরা আমি রাখিতে পারিব না, চাই কি আমার সাজা হইলেও হইতে পারে। ফলকথা, হীরা আমাকে ফিরিয়া দিতে হইল। যোগেশবাবু হীরার মূল্য চারিশত টাকা মেনী ও ভিলের নামে এক স্থানে জমা রাখিয়াছেন। এক্ষণে প্রতি মাসে তিনি তাহাদিগকে পাঁচ টাকা করিয়া দিতেছেন। হীরকও গেল, বাগানের খোঁচটিও ভাঙ্গিল না। ঘোরতর দুঃখ হইল। মা দুৰ্গাকে ভৎসনা করিয়া আমি বলিতে লাগিলাম,- “ আমার এরূপ হরিষে বিষাদ করিলে? চারি শত টাকা আমার হাতে দিয়া কেন য়া লইলে? এবার হইতে আর মা, তোমার আমি পূজা করিব না।” পূজা করিব না শুনিয়া মা দুর্গার হয় রাগ হইল। আমাকে আক্রমণ করিবার নিমিত্ত Տ । কম্প দিয়া আমার জ্বর আসিল। একদিন গেল, দুই দিন গেল, জুর ক্রমেই বাড়িতে লাগিল। তিন দিনে আমি বেচু ভূঞাঁকে ডাকিতে পাঠাইলাম। বেচু জাতিতে কৈবৰ্ত্ত। প্রথম সে চাষ করিত, এখন কবিরাজ হইয়াছে। চারি-পাঁচখানা গ্রামে বেচুর বিলক্ষণ পসার হইয়াছে। আমার হাত দেখিয়া বেচু শ্লোক পড়িয়া বলিল,— “কম্প দিয়া জুর আসে কম্প দেয় নাড়ী। ধর ফাঁড় করে রোগী যায় যম-বাড়ী৷ ইহাকে বিষ-বড়ি দিতে হইবে।” এলোকেশী নিকটে ছিলেন। তিনি বলিলেন,- “সে কি তিন দিনের জুরে বিষ-বড়িী?” বেচু বলিল,— “এ সীমান্য বিষ-বড়ি নয়। এ নূতন ঔষধ সম্প্রতি আমি নিজে মনগড়া করিয়া প্ৰস্তুত করিয়াছি। ইহাতে কোন দোষ নাই। ইহার গুণ অনেক। এই দেখ, আমি নিজে আস্ত দুইটা খাইয়া ফেলি।” এই কথা বলিয়া বেচু নিজে দুইটা বড়ি গিলিয়া ফেলিল। তাহার পর মধুর সহিত খালে মাড়িয়া আমাকে কটা বড়ি খাইতে দিল । বেচু চলিয়া গেল। তিন ঘণ্টা পরে তাহার ঔষধের গুণ প্রকাশিত হইল। আমার চক্ষু দুইটি লাল হইয়া উঠিল। বুক ধড়ফড় করিতে লাগিল। শরীর অবসন্ন হইয়া আসিল। প্ৰাণ যায়। আর

    • ifrits six g3 8.8l www.amarboicom a ᏓrᏔᏌᏬ