পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।


আয়োজন করিয়াছি। আমরা তাহাদিগকে ভজাইব। যেখানে-সেখানে গিয়া বক্তৃতা করিব, পুস্তক ছাপাইব, সংবাদপত্র বাহির করিব। এই সকল কার্য্যের নিমিত্ত আমরা একটি কোম্পানী খুলিয়াছি। কোম্পানীর নাম রাখিয়াছি, 'স্কল, স্কেলিটন এণ্ড কোং!'

 কঙ্কাবতী! তোমার বোধ হয়, মনে থাকিতে পারে যে, “স্কল” মানে মনুষ্যের মাথার খুলি, “স্কেলিটন” মানে কঙ্কাল, অর্থাৎ অস্থি-নির্ম্মিত মনুষ্যশরীরের কাঠামো। মুণ্ড যাহা বলিল, তাহার অর্থ এই যে, ইংরেজি-পড়া লোকেরা যাহাতে ভূতের অস্তিত্ব স্বীকার করেন, তাঁহাদের মনে যাহাতে ভূতের উপর বিশ্বাস হয়, ভূতের প্রতি ভক্তি হয়, এইরূপ শিক্ষা দিবার নিমিত্ত খুলি, কঙ্কাল প্রভৃতি ভূতগণ দলবদ্ধ হইয়াছেন।

 স্কল অর্থাৎ সেই মড়ার মাথাটি আমাকে পুনরায় বলিলেন,— “আমরা কোম্পানী খুলিয়াছি। কোম্পানীর নাম রাখিয়াছি, “স্কল, স্কেলিটন এণ্ড কোং।” ইংরেজি নাম রাখিয়াছি কেন, তা জোন? তাহা হইলে পসার বাড়িবে, মান হইবে, লোকের মনে বিশ্বাস জনিবে। যদি নাম রাখিতাম “খুলি, কঙ্কাল এবং কোম্পানী” তাহা হইলে কেহই আমাদিগকে বিশ্বাস করিত না। সকলে মনে করিত, ইহারা জুয়াচোর। দেখিতে পাও না? যে, যখন মুখোপাধ্যায়, বন্দ্যোপাধ্যায় ও চট্টোপাধ্যায় মহাশয়েরা জুতা কি শরাপ কি হ্যাম বা শূকরের মাংসের দোকান করেন, তখন সে দোকানের নাম দেন, ‘লংম্যান এণ্ড কোং।' অথবা ‘গুডম্যান এণ্ড কোং।' দেখিয়া-শুনিয়া শত-সহস্র বার ঠকিয়া দেশী লোককে আর কেহ বিশ্বাস করে না।

কঙ্কাবতী
৭৯