তৃতীয় পরিচ্ছেদ।
চারিদিবসকাল অনবরত ভাবিয়া-চিন্তিয়া এবং অপর ফারমের আমার পরিচিত অপরাপর কর্মচারীগণের সহিত পরামর্শ করিয়া বঙ্গদেশের যতগুলি প্রধান প্রধান নগরের নাম সংগৃহীত হইবার সম্ভাবনা, তাহা সংগ্রহ করিয়া, তাহার একটা তালিকা প্রস্তুত করিলাম। চারিদিবস পরে, অর্থাৎ পঞ্চমদিবসে আমি সেই তালিকা সহ পুনরায় রাজার কাটরায় গিয়া উপস্থিত হইলাম। সেই স্থানে ইতিপূর্ব্বে মাণিকচাঁদকে আমি যেরূপ অবস্থায় দেখিতে পাইয়াছিলাম, আজও দেখিলাম, তিনি সেই স্থানে সেইরূপ অবস্থায় বসিয়া কার্য্য করিতেছেন। তাঁহার দ্বারবানও সেইরূপে ঘরের বাহিরে বসিয়া রহিয়াছে।
আমি ঘরের ভিতর প্রবেশ করিবামাত্রই তিনি আমাকে সেই স্থানে বসিতে বলিলেন। আমি সেই স্থানে উপবেশন করিলে পর, তিনি কহিলেন, “আপনি একটু অপেক্ষা করুন, আমি আমার হাতের কার্যটী শেষ করিয়া, আপনার সহিত কথোপকথনে নিযুক্ত হইতেছি।” এই বলিয়া তিনি আপনার কার্য্যে মনোনিবেশ করিলেন, আমি সেই স্থানে স্থিরভাবে বসিয়া রহিলাম। এইরূপে প্রায় একঘণ্টাকাল অতিবাহিত হইলে পর, তিনি আপনার হস্তস্থিত কলম সেই স্থানে রাখিয়া আমার দিকে চাহিলেন ও কহিলেন, “এখন আমি আপনার কথায় মনোনিবেশ করিতে প্রস্তুত; বলুন, এখন আমাকে কি করিতে হইবে?”