পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বলে। সে অভিযানের আয়ু এখন শেষ হয়ে গেছে; চুংকিং-এর উপর তার প্রতিক্রিয়া বর্ণনা না করে কল্পনাতেই বেশী অনুভব হয়। ইঙ্গ-মার্কিণের আর একটি অপকৌশল, জাপান পরাজিত হলে চীন এশিয়ার প্রবলতম রাষ্ট্রে পরিণত হবে—এ সম্ভাবনাও চুংকিং-এর সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। আসল ব্যাপার কিন্তু এই জাপানের যদি পরাজয়ই হয়, তবে চীন নিশ্চিত আমেরিকার প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণাধীনে চলে যাবে। যাই হোক, চুংকিং-এর অবস্থা যদি ভাল থাকত, তবে আমেরিকার কৌশলে কাজ হত। কিন্তু চুংকিং-এর অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হওয়ায় এবং চ্যাংসা ও অন্যত্র চুংকিং-বাহিনীর পরাজয়ের ফলে চুংকিং-এর মনোবল ভীষণভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। আমেরিকার প্রচার তাই ফলপ্রসূ হতে পারছে না।

 সংক্ষেপে বলতে গেলে-চুংকিং-এর অবস্থা বর্ত্তমানে এত শোচনীয় এবং ইঙ্গ-মার্কিণদের সাহায্য তার নিজেরই এখন এত দরকার যে, পূর্ব্ব-এশিয়ায় জাপানের বিরুদ্ধে মিত্রপক্ষের যুদ্ধে সে প্রায় কিছুই সাহায্য করতে পারবে না।

 পূর্ব্ব-এশিয়ার এই আলোচনা থেকে আমি নির্ব্বিঘ্নে সিদ্ধান্ত করতে পারি, ইঙ্গ-মার্কিনের পক্ষে জাপানকে পরাজিত করা অসম্ভব। শেষ পর্য্যন্ত জাপানই বিজয়ী হবে। ইউরোপীয় রণাঙ্গনে শেষ পর্য্যন্ত কি ঘটবে না ঘটবে তার উপর ভরসা না রেখেই আমি একথা বলছি।

 এখন আমি ভারতের প্রসঙ্গে আসব। এই জটিল ঘটনাবর্ত্তের মধ্যে ভারত কি পেতে পারে—সে সম্বন্ধে আমার দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাব দেব।

 বৃটেনের অতীত ইতিহাস থেকে দেখা যায়, ভারতের উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়েই শুধু শত্রুর আক্রমণ সম্ভব—এই ধারণার উপর নির্ভর করে বৃটেন চিরকাল ভারতে তদনুরূপ সমর-কৌশল ও সামরিক আয়োজনের ব্যবস্থা করে এসেছে। ভারতের পূর্ব্বদ্বার এখন সহসা উন্মুক্ত হওয়ায়

৯০