পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভারতের অবস্থা

 গত কয়েক দিন ধরে ভারতের অবস্থা সম্বন্ধে যা বলে আসছি, আজকে তার সংক্ষিপ্তসার দেব, আর আমাদের ভবিষ্যৎ কার্য্যক্রমের পুনরুল্লেখ করব। আমাদের লক্ষ্যের দিকে আমরা এতদূর এগিয়েছি যে চূড়ান্ত বিজয় সম্বন্ধে আর আমাদের কোন দ্বিধা নেই। এক একটা সময় আসে, যখন পরিকল্পনা গোপন রাখায় নিপুণ সমর-কৌশল প্রকাশ পায় না; হাতের সমস্ত তাস টেবিলের উপর ছড়িয়ে দেওয়াই কর্ত্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। আজকে সেই সময় এসেছে।

 ভারতে তিন প্রকারের লোক দেখা যায়। এক প্রকারের আছেন, স্বপ্নেও যাঁরা কোনদিন স্বাধীনতার কথা ভাবতে পারেন না। এঁদের সংখ্যা অতি সামান্য—নগণ্য বললেও চলে, যদিও এঁদের মধ্যে কেউ কেউ শিক্ষিত ও সংস্কৃতিবান। এঁদের আমরা স্বচ্ছন্দে অবহেলা করে যেতে পারি। দ্বিতীয় দলে পড়েন, যাঁরা স্বাধীনতা চান এবং অন্তরে অন্তরে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদকে ঘৃণা করেন। কিন্তু মানবসুলভ দুর্ব্বলতার দরুণ, তাঁরা স্বাধীনতার জন্যে বিশেষ কিছু করেন না—সময় সময় আমাদের কেবল নিষ্ক্রিয় সাহায্য দিয়ে থাকেন। এঁদের বেশীর ভাগ দেখতে পাওয়া যায় সরকারী কর্ম্মচারী ও অন্যান্য চাকুরীজীবীদের মধ্যে। সর্ব্বত্র—স্থূলদৃষ্টি সর্ব্বসাধারণের কাছেও যখন আমাদের বিজয় সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে, তখনই এঁরা খোলাখুলি ভাবে এসে আমাদের সঙ্গে যোগ দেবেন। বৈপ্লবিক পরিবর্ত্তনের পর এই ধরণের লোক কি ভাবে এগিয়ে এসে নব-বিধানকে সমর্থন করেন, আমি তা স্বচক্ষে ইউরোপে দেখেছি। ক্রোসিয়া,