পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

শ্লোভাকির মতো নতুন স্বাধীন দেশে এবং জার্ম্মানীর সঙ্গে সংযুক্ত হবার পর অষ্ট্রিয়ায় আমি এ দৃশ্য দেখেছি। ব্রহ্মদেশেও আমি ভূতপূর্ব্ব আই. সি. এস. ভূতপূর্ব্ব হাইকোর্টের জজ এবং সকল বিভাগের ভূতপূর্ব্ব রাজকর্মচারীরা স্বাধীন-ব্রহ্ম গবর্নমেণ্টের নতুন শাসন-ব্যবস্থায় যোগ দিয়েছেন, এ সব আমি দেখেছি। আমরা প্রত্যাশা করি, ভারতেও এই ধরণের লোকেরা আজাদ-হিন্দ গবর্নমেণ্টকে সমর্থন করবেন। আমরাও তাঁদের গ্রহণ করবো—যদি অবশ্য তাঁদের বিরুদ্ধে এমন কোন অভিযোগ না থাকে যে বৃটিশ শাসনাধীনে তাঁরা অন্তরে অন্তরে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের সমর্থক ছিলেন। বস্তুতঃ, আমি এই মর্ম্মে ঘোষণা করতে পারি যে, যারা কর্ম্মনিপুণ ও বর্ত্তমানে বৃটিশ গবর্নমেণ্টের চাকুরী করছেন— তাঁদের আজাদ-হিন্দ গবর্নমেণ্টও গ্রহণ করবেন—অবশ্য যদি তারা অন্তরে অন্তরে বৃটিশ সমর্থক না হন এবং বৃটিশের অধীনে চাকুরী করার সময় বিপথে গিয়ে ভারতের স্বাধীনতা-আন্দোলনের ক্ষতি না করে থাকেন। আর বৃটিশ-ভারতীয় বাহিনীর যাঁরা এই স্বাধীনতা-সংগ্রামের সময় আমাদের পক্ষে এসেছেন কিংবা ভবিষ্যতে আসবেন আজাদ-হিন্দ গবর্নমেণ্ট তাঁদের সম্বন্ধে ইতিপূর্ব্বেই ঘোষণা করেছেন যে আজাদ-হিন্দ ফৌজের অন্যান্য সদস্যদের মতোই তাঁদের প্রতি ব্যবহার করা হবে; অবসর-গ্রহণের সময় তাঁরা বৃটিশ-ভারতীয় বাহিনীতে যতদিন কাজ করেছিলেন তার সঙ্গে আজাদ-হিন্দ ফৌজে তাদের চাকুরী-কাল যোগ দিয়ে—তারই ভিত্তিতে তাঁরা বৃত্তি পাবেন।

 তৃতীয় এক প্রকারের লোক আছেন, তাঁরা শুধু স্বাধীনতাকামী নন, স্বাধীনতা-লাভের জন্যে তাঁরা সক্রিয়। প্রধানতঃ তাঁদেরই উদ্দেশ্যে আমি এই বক্তৃতা দিচ্ছি।

 স্বাধীনতাকামী ভারতীয়ের পক্ষে স্বাধীনতার পথ কি কি? প্রথম পথ হচ্ছে, প্রার্থনা ও আবেদনের পথ। এ পথে মনে বিশ্বাস রাখতে হবে

৯৪