পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ২। ভারতীয় জনগণ এখন যথেষ্ট এগিয়ে গেছে; তারা নিজেদের ব্যাপারে কর্ত্তৃত্ব গ্রহণে সম্পূর্ণ সক্ষম। এজন্যে তারা যথেষ্ট শিক্ষা পেয়েছে।

 ৩। আমি দেখছি, দেশব্যাপী জাতীয় জাগরণ হয়েছে এবং স্বাধীনতা লাভের জন্যে যে নিগ্রহ ও আত্মত্যাগ প্রয়োজন তার জন্যেও জনগণ প্রস্তুত। তাছাড়া, রাজনৈতিক দিক থেকে দেশবাসী সঙ্ঘবদ্ধ এবং নিয়মানুবর্ত্তী।

 ৪। এপর্য্যন্ত আমাদের যে একটি জিনিসের অভাব ছিল—একটি মুক্তি-ফৌজ—তারও জন্ম হয়েছে।

 ৫। ভারতের মুক্তির জন্যে বাইরের যে সামরিক সাহায্য অপরিহার্য্য, ভারতের পূর্ব্বদ্বার খুলে যাওয়ায় এবং পূর্ব্ব-এশিয়ার ভারতীয়দের প্রবল প্রচেষ্টার ফলে—সেটা পাওয়াও আজ সম্ভব হয়েছে।

 ৬। যুদ্ধ পরিস্থিতির দরুণ বৃটিশ শক্তির উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ভারত-রক্ষার অয়োজন পণ্ড হয়ে গেছে। ভৌগোলিক এবং রাজনৈতিককারণে পূর্ব্বদিক থেকে ভারতে অভিযান করা আমাদের পক্ষে সুবিধাজনক, কিন্তু বৃটেনের পক্ষে অত্যন্ত অসুবিধাজনক।

 ৭। ভারতের অভ্যন্তরে আমাদের অভিযান চালানোর জন্যে আমরা পূর্ব্ব-এশিয়ায় একটি শক্তিশালী ঘাঁটি গড়ে তুলতে পেরেছি। লোকবল, ধনবল এবং দ্রব্যবলের দিক থেকে সামগ্রিক সমর-প্রস্তুতির মারফৎ পূর্ব্ব-এশিয়ার ত্রিশ লক্ষ ভারতবাসীকে সঙ্ঘবদ্ধ করে একটা ভয়ঙ্কর শক্তিতে পরিণত করা হয়েছে। যতদিন প্রয়োজন ততদিন তারা ভারতের অভ্যন্তরে আমাদের অভিযান পরিচালনায় কার্য্যকরী সাহায্য করতে পারবে।

 ৮। সঙ্কট উপস্থিত হলে জাপানের মতো একটি প্রথম শ্রেণীর আধুনিক শক্তির সাহায্য আমরা পেতে পারি—বিশেষ করে যদি ভারতের সম্মিলিত মিত্রশক্তি আমাদের পক্ষে খুব বেশী শক্তিশালী বলে প্রমাণিত হয়।

১০২