পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভারতে ভাড়াটে প্রচারকরা তাদের হয়ে এই নোংরা কাজ করে। আমি জানি, ভারতে একটা প্রবল অর্থনৈতিক দুর্দ্দশা চলেছে, এবং জনগণ অনশন ভোগ করছে। কিন্তু তা বলে এটা কখনো উচিত নয়, শিক্ষিত লোকেরা এবং সময় সময় নারীরাও এগিয়ে এসে সস্তায় আত্মবিক্রয় করবেন। কোন কোন সময়ে আমি উচ্চ ডিগ্রিধারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদেরও ভারত-বিরোধী রেডিওর প্রচার-কেন্দ্র থেকে মিথ্যা প্রচার করতে শুনেছি।

 একটা উদাহরণ দিয়ে আমি বিপক্ষীয়দের মিথ্যা প্রচার প্রমাণিত করছি। ভারত-বিরোধী রেডিও একাধিকার বলছে, ভারতে আমি এত অপ্রিয় ছিলাম যে, জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে বিতাড়িত হয়েছিলাম এবং দেশ ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। ভারতে কে না জানে, যে ১৯৩৯-এর জানুয়ারী মাসে মহাত্মা গান্ধী এবং পণ্ডিত নেহেরুর বিরোধিতা সত্ত্বেও আমি ভোটের সংখ্যাধিক্যে কংগ্রেসের সভাপতি হিসাবে পুনর্নির্ব্বাচিত হয়েছিলাম? কে না জানে, আমি যদি পুরাতন ওয়ার্কিং কমিটিকে পুনরায় মনোনীত করতাম, তবে মহাত্মা গান্ধীর সমর্থনে আমি আর একবৎসরের জন্যে সহজেই প্রেসিডেণ্ট থেকে যেতে পারতাম? গান্ধীজী ও আমার মধ্যে বিরোধ বেধেছিল এইনিয়ে যে, পুনর্নির্ব্বাচনের পর আমি নিজের ইচ্ছানুযায়ী ওয়ার্কিং কমিটি মনোনয়নের অধিকার চেয়েছিলাম। আমার পক্ষে দেশে থাকা কিংবা কারাগারে নিরাপত্তা বন্দী হিসাবে থাকা ছিল সহজতম ব্যাপার। ভারতে কে না জানে যে, বৃটিশদের হাত থেকে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসা আমার পক্ষে ছিল সর্ব্বাপেক্ষা কঠিন এবং সবচেয়ে বেশী বিপদসঙ্কুল ব্যাপার? ভারত-বিরোধী রেডিও এ কথা জানে কি জানে না যে, আমার পলায়নে বাধা দিতে পারে নি বলে কয়েকজন পুলিশ অফিসারের চাকুরী গেছে? ভারত-বিরোধী রেডিও জানে কি জানে না যে আমাকে ধরার জন্যে এবং ধরতে না

১১৪