পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পারলে হত্যা করার জন্যে গুপ্তচরদের আমার পিছনে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছিল?

 অন্যধরণের প্রচারও আছে যা সমান ঘৃণ্য না হলেও সমান মিথ্যা? উদাহরণ স্বরূপ বলতে পারি, ১৯৪৩ সালে বিশ্ব-পরিভ্রমণ করে আমি যখন টোকিও পৌঁছেছিলাম, বৃটিশদের মুখরক্ষার জন্যে তখন ভারত-বিরোধী রেডিও বলতে বাধ্য হয়েছিল—একবার নয়, বহুবার—যে, জার্ম্মান-গবর্নমেণ্টের সঙ্গে আমার মতভেদ হওয়ায় আমি ইউরোপ ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। এই মিথ্যার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হল, যখন পূর্ব্ব-এশিয়ায় আজাদ হিন্দ সাময়িক গবর্নমেণ্ট প্রতিষ্ঠার পর জার্ম্মান গবর্নমেণ্ট তাকে পরিপূর্ণ সমর্থন করলেন, এবং গবর্নমেণ্টের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে সরকারী বাণী পাঠালেন। সম্প্রতি লর্ড লুই মাউণ্ট ব্যাটেনের ব্রহ্ম পুনরুদ্ধারের ব্যর্থতা এবং আজাদ-হিন্দ ফৌজের অগ্রগতিতে বাধা-দানের ব্যর্থতা ঢাকার জন্যে ভারত-বিরোধী রেডিও আমার সঙ্গে জাপানী গবর্নমেণ্টের মতবিরোধের কাল্পনিক কাহিনী প্রচার করছে। বলছে যে, আমাদের সৈন্য ভারতে প্রবেশ করার পর দেশে কোন বিপ্লব হয় নি বলে জাপানী গবর্নমেণ্ট আমার বিষয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে। ভারতে যে কেউ আমার বেতার-বক্তৃতা শুনে থাকেন। তিনিই জানেন, আমি দেশবাসীদের বরাবর এই বলে সতর্ক করে আসছি যে আমরা নির্দ্দেশ না দেওয়া পর্য্যন্ত তাঁদের বিপ্লব কিংবা বৃহদায়তনের কোন নাশকতামূলক কাজ করা উচিত হবে না। নিতান্ত গণ্ডমূর্খও বুঝতে পারবে, আমাদের সেনাদল ভারতের মধ্যে বেশ কিছুদূর প্রবেশ করে বিপ্লবকারীদের সাহায্যদানের অবস্থা সৃষ্টি না করা পর্য্যন্ত দেশবাসীর পক্ষে বিপ্লব কিংবা বিপুলায়তনে নাশকতামূলক কাজের চেষ্টা করা হবে আত্মহত্যারই সামিল। আমি আবার বলছি, এই সব প্রচারকৌশল আমাকে আদৌ বিস্মিত করে না। যারা আমাকে হত্যা করাতে

১১৫