পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পারলে খুসী হত, তাদের পক্ষে এই প্রকার প্রচারের অর্থ অবোধ্য নয়।

 কিন্তু যে বিষয়টি বিস্ময়কর অপমানজনক তা হচ্ছে, এই ১৯৪৪ অব্দেও এমন ভারতীয় পাওয়া যাচ্ছে যারা সামান্য অর্থের জন্যে আত্মবিক্রয় করে সব রকম নোংরা কাজ করে। বৃটিশরা যে আমাকে মনের সুখে গালাগালি করবে—আমাকে ‘কুইস লিং’ “পুতুল’ প্রভৃতি বলবে—এ তো স্বাভাবিকই। কিন্তু মিথ্যা প্রচারকার্য্যের জন্যে এখনও তারা মিরজাফর ও উমিচাঁদদের পাবে কেন? এমন কোন ভারতবাসাই নেই যে বিশ্বাস করবে, আমি জাপানী কিংবা অন্য কোন বিদেশী শক্তির কাছে নিজেকে এবং আমার দেশকে বিক্রী করতে পারি।

 বৃটিশের ভাড়াটে ভারতীয় প্রচারকরা আর একটি কুকাজ করছে—সেটি হচ্ছে, জাপানী নৃশংসতা সম্বন্ধে মিথ্যা প্রচারকার্য্য—বিশেষ করে, ভারতীয়দের উপর জাপানীদের নৃশংস অত্যাচারের কথা। কোন ভারতবাসী কি বিশ্বাস করতে পারে, পূর্ব্ব-এশিয়ার কোথাও আমার দেশবাসীদের সঙ্গে জাপানীরা যদি কুব্যবহার করত, তবে আমি এবং পূর্ব্ব-এশিয়াস্থ আমার দেশবাসীরা জাপানীদের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করতাম এবং তাদের সেনাদলের সঙ্গে পাশাপাশি যুদ্ধ করতাম? জাপান যখন নিজের পথ থেকে সরে এসে ভারতীয় স্বাধীনতা-আন্দোলন সর্ব্ব প্রকারে সমর্থন করছে এবং স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী গবর্নমেণ্টকে সরকারী সমর্থন দিয়েছে, তখন আমার স্বদেশস্থিত দেশবাসীদের উচিত, ভারতীয় জনগণের উপর জাপানীদের অত্যাচারের মিথ্যা কাহিনী না রটিয়ে আপাতত মুখ বন্ধ করে থাকা। বৃটিশের অধীনে থেকেও যারা বৃটিশের কুব্যবহার নীরবে সহ্য করে নি, তারা পৃথিবীর অন্য কোন বিদেশী শক্তির অত্যাচার কিংবা কুব্যবহার কখনো সহ্য করবে না। অত্যাচারের কাহিনী প্রচার বৃটিশ প্রচারকদের প্রিয় কৌশল। এখন তারা সকল

১১৬