পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভারতীয় ধর্ম্মের— বিশেষ করে ইসলামের রক্ষক হয়ে দাঁড়িয়েছে। যতদিন জার্ম্মাণী ও সোভিয়েটের মধ্যে চুক্তি ছিল এবং সােভিয়েটের পক্ষ থেকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদীদের সাহায্য দেবার সম্ভাবনা ছিল, ততদিন বৃটিশ প্রচারকরা— বিশেষ ভাবে ভারতের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে প্রচারকার্য্য চালাত যে বলশেভিকরা ধর্ম্ম-বিরোধী। যখন ভারতের উত্তর-পশ্চিম থেকে উত্তর-পূর্ব্ব দিকে বিপদের সম্ভাবনা এসে পড়ল, তখন তারা প্রচারকার্য্য সুরু করল, জাপানীরা ধর্ম্ম-বিরোধী—বিশেষ করে তারা ইসলাম-বিরােধী। ভারতের মধ্যেই মৌলবী ও পণ্ডিতদের এই শিক্ষায় শিক্ষিত করা হল, তারপর তাদের বিভিন্ন সৈন্য়-শিবিরে পাঠানো হল ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে প্রচারকার্য্য চালানাের জন্যে। পূর্ব্ব-এশিয়ায় তারা নবাগত—এই প্রকারের ভাণ করে তারা প্রচারকার্য্য চালাতে লাগল। ভারতে আমরা যে সব লােক পাঠিয়েছি, তাদের জন কয়েক ধরা পড়েছে। তাদের এই মর্ম্মে জাপ-বিরােপী প্রচারকার্য্য করতে বাধ্য করানাে হচ্ছে যে জাপানীরা পূর্ব্ব-এশিয়ায় মুসলমানদের উপর অত্যাচার করছে। আমাদের দিক থেকে এর উত্তর হচ্ছে, পূর্ব্ব-এশিয়ার ভারতীয় মুসলমানরা এখন মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্যে হিন্দু, শিখ ও খৃষ্টানদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযােগিতায় কাজ করে যাচ্ছেন। এই প্রচারের বিরুদ্ধে আরও জোরালাে উত্তর, আজাদ হিন্দ ফৌজে মুসলমানের সংখ্যা শতকরা হিসাবে সকল সম্প্রদায়ের চেয়ে বেশী; সেনাবাহিনীর উচ্চতর পদগুলিতে তাঁদের সংখ্যা আরও বেশী। ভারতীয় জাতীয় বাহিনীর এই সব মুসলমান অফিসার সাধারণ লােক নন। তাঁরা ভারতের কয়েকটি শ্রেষ্ঠ বংশের সন্তান, দেরাদুনের সামরিক বিদ্যালয় এবং অন্যত্র শিক্ষাপ্রাপ্ত—এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীতেও সুপরিচিত।

 যে সব ভাড়াটে ভারতীয় জেনে শুনে সামান্য লাভের আশায় আত্মবিক্রয় করেছে, তাদের মনে বিশ্বাস উৎপাদন করবার জন্য কিংবা তাদের

১১৭