পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বাধীনতা লাভের সব আশা-ভরসা নির্ভর করবে একমাত্র আমাদের পরিকল্পনার সাফল্যের উপর। মহাত্মা গান্ধীর পরিকল্পনা যদি সফল হয়, তবে আমাদের চেয়ে বেশী সুখী কেউ হবেনা—কেননা তার ফলে স্বাধীনতা অতি সহজে পাওয়া যাবে। কিন্তু সে পরিকল্পনা যখন ব্যর্থ হয়েছে, তখন স্বদেশে এবং বিদেশে স্বদেশপ্রেমিক ভারতীয়দের পক্ষে আমাদের পরিকল্পনার আশ্রয় করা ছাড়া অন্য উপায় নেই। যদি বৃটিশ কর্ত্তৃপক্ষ আমাদের কার্য্যাবলী প্রকৃতই ব্যর্থ করতে চান, তবে “ভারত ছাড়ো” প্রস্তাবের ভিত্তিতে মহাত্মা গান্ধী এবং কংগ্রেসের সঙ্গে সন্ধিস্থাপন ছাড়া তাঁদের গত্যন্তর নেই।

 বিরুদ্ধ পক্ষ মনে করে, তারা আমাকে স্বপ্নদ্রষ্টা বলে অভিহিত করে ছোট করতে পারবে। স্বীকারই করছি আমি স্বপ্নদ্রষ্টা। ভারতের স্বাধীনতার এই স্বপ্ন দেখার ব্যাপারে আমার বিস্তর ভাল ভাল সঙ্গী আছেন। পৃথিবীতে যাঁরা বড় কিছু করেছেন তাঁরা সকলেই ছিলেন স্বপ্নদ্রষ্টা। নেপোলিয়ঁ বোনাপার্টির মতো বস্তুবাদী সৈনিকও ছিলেন পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্বপ্নদ্রষ্টা। আমি যদি ভারতের স্বাধীনতার স্বপ্ন না দেখতাম, তবে দাসত্বের শৃঙ্খলকে চিরস্থায়ী বলে মেনে নিতাম। স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করা যায় কিনা, সেইটাই আসল প্রশ্ন। আমার নিজের কথা বলতে পারি, আমি যে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম তা আমি পূরণ করেছি। আঠারো মাসেরও অধিককাল পূর্ব্বে আমি ঘোষণা করেছিলাম, পৃথিবীর কোন শক্তিই আমার ভারত থেকে বহির্গমনে বাধা দিতে পারে নি, আবার সময় পূর্ণ হলে পুনরায় ভারত-সীমান্ত অতিক্রম করতেও আমাকে পৃথিবীর কোন শক্তি বাধা দিতে পারবে না। তখন লণ্ডনের বি. বি. সি. এবং ভারত-বিরোধী রেডিও আমাকে এই ঘোষণার জন্যে উপহাস করেছিল। আজ তারা এ সম্বন্ধে উচ্চবাচ্য করে না। তার কারণ, তারা সরকারীভাবে স্বীকার করুক আর নাই করুক, সারা পৃথিবী

১১৯