পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ওয়াভেল, কিংবা জেনারেল অকিনলেক কিংবা উভচর অ্যাডমিরাল লর্ড লুই মাউণ্টব্যাটেনের কথা বলছে না। কিন্তু আমি তাদের মনে করিয়ে দিতে পারি, ইরিট্রিয়া কিংবা আবিসিনিয়ার মতো স্থানে ইটালীয়দের বিরুদ্ধে ছাড়া, বৃটিশরা একা একা এ যুদ্ধে কোন একটি সমরেও বিজয়লাভ করতে পারেনি। জেনারেল মণ্টগোমারী যা কিছু কৃতিত্ব অর্জ্জন করেছেন, তার মূলে প্রায় পুরোপুরি আছে আমেরিকার হস্তক্ষেপ এবং আমেরিকার সমর্থন। তা নইলে আমেরিকানরা যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত হবার আগেই বৃটিশরা এই সব যুদ্ধে জয় লাভ করত।

 বেশ কিছুকাল ধরে বিরোধী প্রচারকরা গল্প বলে যাচ্ছে, আজাদ হিন্দ ফৌজ জাপানের হাতের পুতুল; তারা জাপানের হয়েই যুদ্ধ করছে। কিন্তু শেষ পর্য্যন্ত তারা বুঝতে পেরেছে, এ অপকৌশল কাজে লাগছে না। প্রত্যেকেই প্রশ্ন করছে, একটা পুতুল-বাহিনী কি ভাবে এরূপ সাহস এবং জেদের সঙ্গে লড়াই করতে পারে? তাই প্রচার-কৌশল পালটানো হয়েছে; বিশ্ববাসীদের বলা হচ্ছে, আজাদ-হিন্দ ফৌজ দরিদ্র বাহিনী— তাদের খাদ্যবরাদ্দ খুব কম, সমর-সজ্জা অপ্রচুর। আমি বিস্মিত হয়ে ভাবছি বর্ত্তমানে আজাদ হিন্দ ফৌজ সম্বন্ধে আমাদের বিরুদ্ধদলের শুধু তা হলে এই কথাই মাত্র বলার আছে। আমরা কখনও দাবী করিনি যে, আমাদের সেনাবাহিনী ভারতের বৃটিশ সেনাবাহিনীর মত সুসজ্জিত। বৃটিশের পক্ষে ভারত বিমথিত করে তাদের সেনাবাহিনীকে খাওয়ানো পরানো সহজ হয়েছে। কিন্তু আমাদের মতো বিপ্লবী বাহিনীকে কি অবস্থায় যুদ্ধ করতে হয়, আমাদের সেনাবাহিনী তা পূর্ব্ব থেকেই জানে। বৃটিশ বাহিনী শুধু রিয়ার, রাম, টিনজাত শূকর-মাংস এবং গো-মাংসের জোরেই যুদ্ধ করতে পারে; আর আমাদের সেনাবাহিনীকে চরম অসুবিধাজনক অবস্থার মধ্যেও যুদ্ধ করতে শেখানো হয়েছে। আয়ার্ল্যাণ্ড, ইটালী কিংবা রাশিয়াতেই হোক কিংবা অন্যত্রই হোক, পৃথিবীর যে কোন

১২২