পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হয়েছে। বর্ত্তমান গতিতে ইটালীর যুদ্ধ কখন শেষ হবে? আর মিত্রবাহিনী ব্রেণার-গিরিবর্ত্ম পার হয়ে জার্ম্মানীতেই বা কথন প্রবেশ করবে? ফ্রান্সে জার্ম্মাণদের প্রত্যাক্রমণ এখনও পূর্ণবেগে আরম্ভ হয় নি; সেখানেই বা সাত সপ্তাহ যুদ্ধের পর মিত্রশক্তি কি করেছে? তারা যে গুরুতর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, তার তুলনায় তারা লাভ করেছে কি? ভারতীয় স্বার্থ-বিচারে মিত্রবাহিনী ফ্রান্স ও ইটালীর যতই অভ্যন্তর ভাগে প্রবেশ করবে, আমাদের সুবিধা হবে তত বেশী। তারা যেসব তথাকথিত বিজয়লাভ করেছে কিংবা ভবিষ্যতে করবে, তার ফলে তাদের শক্তিও গুরুতর রকম কমে যাবে। এরূপ সম্ভাবনা এখনও রয়েছে, শেষ পর্য্যন্ত মিত্রশক্তি ফ্রান্স থেকে বিতাড়িত হবে, এবং ইটালীতে তাদের অবরুদ্ধ হবে। ইউরোপের যুদ্ধ প্রথম শেষ করে, তারপর পূর্ব্ব-এশিয়ায় জাপানকে পরাস্ত করতে আসার সম্বন্ধে যেসব কথা উঠেছে, সেসব কথা সৈন্যদলে ব্যবহৃত ভাষায় বলতে হয় “বাজে কথা” (Tommy Rot)। আমি ইতিপূর্ব্বে এক বেতার-বক্তৃতায় বলেছি যে, ইঙ্গ-মার্কিণরা কখনও ইউরোপের যুদ্ধে জয়ী হতে পারবে না। কিন্তু আমি এমন কথাও বলছি, যদি তারা ইউরোপীয় যুদ্ধে জয়ী হতে পারে, তাহলেও তাদের পূর্ব্ব-এশিয়ায় জাপানের সম্মুখীন হবার মতো শক্তি থাকবে না। একথা ভুললে চলবে না যে, যুদ্ধ পণ্যোৎপাদন এবং মানুষের শক্তির সীমা আছে। কাজেই, আজ চোখের সামনে যা দেখা যাচ্ছে, তা সত্ত্বেও মিত্রশক্তির পক্ষে অবস্থা নৈরাশ্যজনক।

 মণিপুরের কথা যখন আলোচনা করছিলাম, তখন আমি একটি কথা বলতে ভুলে গেছি। সে কথা বেচারী মণিপুরের মহারাজার সম্বন্ধে। তিনি আজ কোথায়? কংগ্রেস-পূর্ব্ব আমলের দেশীয় রাজারা কোথায়? মহারাজা এবং তাঁর পরিবারবর্গ কি অবস্থায় আছেন? এত এত মহারাজা এবং নবাবরা যখন সৈন্য-সংগ্রহকারী সার্জ্জেণ্টরূপে কাজ করছেন,

১২৪