পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

উদ্দেশ্যই সিদ্ধ হতে চলেছে। বিদেশে পরিভ্রমণ করে আমি স্বচক্ষে সব কিছু দেখার সুযোগ পেয়েছি এবং যুযুধান শক্তিবর্গের সামর্থ্যের পরিমাণ বুঝতে পেরেছি। আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে ইঙ্গ-মার্কিণ সাম্রাজ্যবাদের পতন সুনিশ্চিত। বাইরে থেকে আমি স্বদেশবাসীদেরও এ সংবাদ জানিয়েছি। এই দৃশ্য দেখে আমি আনন্দ পেয়েছি যে, জগতের যেখানে আমার যে দেশবাসী আছে তারা সবাই জেগে উঠেছে এবং দেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামে যোগদানের জন্যে ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। আরও আনন্দের বিষয় এই যে, অক্ষ-শক্তিবর্গও ভারতকে বিদেশের অধীনতা থেকে মুক্ত দেখতে আগ্রহাকুল এবং ভারতবাসীরা যদি তাদের সাহায্য চায় তবে সে সাহায্য দিতে তারা প্রস্তুত।

 বিদেশস্থ ভারতীয়দের মনোভাব সম্বন্ধে আমার এই বিশ্বাস যে, তাঁদের মধ্যে এমন একজনও নেই যিনি ভারতের স্বাধীনতা কামনা না করেন, এবং ভারতের স্বাধীনতা-সংগ্রামে যিনি সাহায্য করতে প্রস্তুত নন। অক্ষশক্তিবর্গের মতিগতি সম্বন্ধে যদি কারও মনে কোন সংশয় থাকে, তবে তাঁকে আমি অপর্য্যাপ্ত প্রমাণের দ্বারা বুঝিয়ে দিতে পারি, আমাদের নিজেদের কথা বাদ দিয়ে এরাই বর্ত্তমানে আমাদের প্রকৃষ্ট বন্ধু।

 আপনারা আমাকে বিশ্বাস করুন। আমি আমার দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোন কাজ করতে পারি, আমার যারা অতি-বড় শত্রু, আমার সম্বন্ধে এমন কথা বলার ধৃষ্টতা তাদেরও হবে না। বৃটিশ গবর্নমেণ্টই যখন আমার মনের শক্তি দমিত করতে পারে নি, কিংবা আমাকে প্রতারিত ও প্রলুব্ধ করতে পারে নি, তখন জগতের অপর কোন শক্তিই তা করতে পারবে না। সুতরাং আমার কথা বিশ্বাস করুন। বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আপনারা যে সংগ্রাম আরম্ভ করেছেন, যদি তার জন্যে আপনারা বাইরের সাহায্য চান, তবে সত্যই অক্ষশক্তিবর্গ আপনাদের আনুকূল্য করবে। এই সাহায্যের প্রয়োজন আছে কিনা, তা স্থির

১০