পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভারতীয় জনগণ তাদের জাতীয় মুক্তি অর্জ্জনের অভূতপূর্ব্ব সুযোগ পেয়েছে।

 বিদেশে ভারতীয়গণ রাজনৈতিক চেতনা লাভ করেছে এবং একটি প্রতিষ্ঠানে সঙ্ঘবদ্ধ হয়েছে। ভারতের ইতিহাসে এ ঘটনা নূতন। তারা তাদের দেশবাসীর সঙ্গে সমানভাবে চিন্তাই শুধু করছে না, স্বাধীনতার পথ ধরে সমতালে এগিয়ে চলেছে। পূর্ব্ব এশিয়ায় আজ কুড়ি লক্ষেরও অধিক ভারতবাসী এক সুসংবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে সঙ্ঘবদ্ধ হয়েছে। তারা পূর্ণ সমরায়োজন ধ্বনিতে অনুপ্রাণিত হয়েছে। তাদের সম্মুখে রয়েছে ভারতের আজাদী ফৌজ—তাদের মুখে এক কথা ‘দিল্লী চলো’।

 ভণ্ডামির দ্বারা ভারতীয়দের হতাশাচ্ছন্ন করে, লুঠতরাজ করে, তাদের অনাহার ও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়ে বৃটিশ শাসকরা ভারতীয়দের শুভেচ্ছা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এখন তাদের অবস্থা বিশেষ সঙ্কটজনক। সেই অস্বস্তিকর শাসনের শেষচিহ্ন ধ্বংস করার জন্য মাত্র একটি অগ্নিস্ফুলিঙ্গের প্রয়োজন। সেই স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টির ভার আজাদী ফৌজের উপর। স্বদেশে অসামরিক জনগণের সমর্থনে এবং বিদেশে আমাদের অজেয় মিত্রবর্গের সহায়তা ও আত্মশক্তির উপর নির্ভর করে ভারতীয় আজাদী ফৌজ তাদের ঐতিহাসিক ভূমিকা সাফল্যের সঙ্গে অভিনয় করতে পারবে বলে বিশ্বাস রাখে।

 পূর্ব্ব-এশিয়ায় ভারতীয় স্বাধীনতা-লীগ আজাদ-হিন্দ ফৌজের অস্থায়ী গবর্নমেণ্ট গঠন করেছেন। এখন আমরা পূর্ণ দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে অবতীর্ণ হচ্ছি। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা তিনি আমাদের কাজ এবং মাতৃভূমির মুক্তির জন্যে আমাদের সংগ্রামকে আশীর্ব্বাদ করুন। দেশমাতৃকার মুক্তি ও মঙ্গলের জন্যে এবং বিশ্বের দরবারে তাঁকে উন্নীত করবার জন্যে আমরা আমাদের এবং সঙ্গী সহকর্ম্মীদের জীবন পণ করছি।

 অস্থায়ী গবর্নমেণ্ট প্রত্যেক ভারতীয়ের আনুগত্য দাবী করে, এবং

২৩