পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 এক বৎসর পূর্ব্বে আমি ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সাহায্যের জন্য কিছু অর্থ চেয়েছিলাম। আজ আমি গর্ব্ব এবং আনন্দের সঙ্গে বলছি, আমি যা চেয়েছিলাম তার চেয়ে অনেক বেশি নগদ টাকা আমি পেয়েছি। তা ছাড়া, এ পর্য্যন্ত আমরা যা সংগ্রহ করেছি, ভবিষ্যতে আমাদের প্রত্যাশিত অর্থের তুলনায় তা ভগ্নাংশ মাত্র। আমাদের অর্থনৈতিক কর্ম্মতালিকার অঙ্গ হিসাবে আমরা ১৯৪৪-এর এপ্রিল মাসে নিজেদের একটি জাতীয় ব্যাঙ্ক স্থাপন করতে পেরেছি—তার নাম ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক অব আজাদ-হিন্দ লিমিটেড্। ব্যাঙ্কটি এরই মধ্যে এত সাফল্য লাভ করেছে যে, ইতিমধ্যেই কয়েকটি স্থানে এর শাখা-কার্য্যালয় খােলা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও খােলা হবে। ভবিষ্যতে আমরা ভারতীয় অর্থের সাহায্যে আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন চালাতে পারব—এ বিষয়ে এখন আর আমার কোন সন্দেহ নেই।

 নগদ টাকা দিয়ে সাহায্য করা ছাড়াও পূর্ব্ব-এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলনিবাসী ভারতীয়েরা নানা দ্রব্যাদি দিয়েও সাহায্য করছেন। তাঁদের সহৃদয়তা এবং পরিশ্রমের গুণেই সমগ্র পূর্ব্ব-এশিয়া থেকে আমাদের সেনাবাহিনী ও স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্যে প্রয়ােজনীয় সরবরাহ সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। এত বেশী সাড়া পাওয়া গেছে যে, যানবাহনের অসুবিধা না থাকলে সরবরাহ সংগ্রহে এ পর্য্যন্ত আমরা যে কৃতিত্ব দেখিয়েছি তার চেয়ে অনেক বেশী কৃতিত্ব দেখানাে যেত। কার্য্যত আমরা পূর্ব্ব এশিয়ার কয়েক স্থানে সরবরাহ মজুত করে রাখতে পেরেছি— এখন আবশ্যক যানবাহন পেলেই হয়। ভবিষ্যতে আমরা যে সব সমস্যার সম্মুখীন হব, তাদের মধ্যে একটা বড় সমস্যা হবে যানবাহন সমস্যা এবং অংশত নিজেদের চেষ্টায় এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।

 লােকের জন্য আমি যে আবেদন জানিয়েছিলাম, তাতেই সাড়া পাওয়া গেছে সব চেয়ে বেশী। সৈন্যদলে যােগদানের জন্যে অসংখ্য লােক এগিয়ে

২৭