পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সংগ্রামরত সৈন্যদের মনে নূতন প্রেরণার সঞ্চার করেছে তা নয়—যারা রণাঙ্গণের পিছনে আছে তাদের মনেও নব বীর্য্য দান করেছে। সমালোচকরা হয়ত বলতে পারেন, বিগত কয়েক সপ্তাহে আমাদের অগ্রগতি এমন কিছু দর্শনীয় হয় নি;—কিন্তু এতে আমরা বিচলিত নই। গত আগষ্টে আমি প্রথম বলি, শীঘ্রই আমরা ভারতের দিকে অভিযান আরম্ভ করতে পারব। তার পর থেকে আমি পূর্ব্ব-এশিয়ার ভারতীয়দের বিশেষ করে আজাদ হিন্দ ফৌজের সদস্যদের পুনঃ পুনঃ বলে আসছি, ভারত সীমান্ত অতিক্রম করার পরই আমাদের সব চেয়ে কঠিন যুদ্ধ করতে হবে। ভয়ঙ্কর যুদ্ধের জন্যে প্রস্তুতির পর, এবং প্রত্যাসন্ন দীর্ঘ ও কঠিন সংগ্রামের সম্পর্কে আমার দেশবাসী ও সৈন্যদের বার বার সাবধান করে দেবার পর, বিপক্ষদের প্রবল প্রতিরোধ উপলব্ধি করে বিস্মিত হব কেন? বিপক্ষদল যা করছে, তা আমাদের প্রত্যাশানুযায়ীই হয়েছে। এখন যা ঘটছে আমরা তারই অপেক্ষা করেছিলাম। অতএব ভারতমুখী অভিযান আরম্ভ করার সময়ে আমাদের যে আশাবাদিতা ছিল, এখনও তা ঠিক পূর্ব্বের মতই সজীব ও প্রোজ্জ্বল আছে।

 আমাদের সৈন্যরা অনেক অসুবিধা ও কষ্টের সম্মুখীন হয়েছে কিন্তু সে সম্বন্ধে তাদের কাছ থেকে কোন অভিযোগ আমি পাইনি। সৈন্যরা এ পর্য্যন্ত একটি মাত্র অভিযোগ করেছে—সে অভিযোগ এসেছে যখন তাদের সম্মুখ রণাঙ্গণে পাঠাতে বিলম্ব হয়েছে। একটি উদাহরণ দিচ্ছি। সম্প্রতি আমি একটি হাসপাতাল পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেইখানে আহত, ম্যালেরিয়া এবং অন্যান্য রোগগ্রস্ত সৈন্যরা আছে। সেরে ওঠা মাত্র তাদের রণাঙ্গণে ফিরে পাঠানোর জন্য তারা আমার কাছে অত্যন্ত ব্যাকুলতা প্রকাশ করল। এরাই সম্মুখ রণাঙ্গণে যুদ্ধ করেছে, সেখানকার অবস্থা আগাগোড়া জানে তবু তারা খুব হাসি খুসী এবং পুরোপুরি আশাবাদী। কোনরূপ অত্যুক্তি না করে আমি বলতে পারি পূর্ব্ব-এশিয়ার সকল

৩৯