পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পর্য্যন্ত মহাত্মা গান্ধী এবং বৃটিশ গবর্নমেণ্টের মধ্যে আপোষ না হচ্ছে ততদিন আমাদের উদ্বিগ্ন হবার কারণ নেই। আর ওদিকে যাই হোক, যুদ্ধ আমাদের করতেই হবে এবং মহাত্মা গান্ধী যদি আপোষ করেনও, তবু আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাব। এবিষয়ে সন্দেহ নেই, কংগ্রেসের সঙ্গে বৃটিশ গবর্ণমেণ্টের আপোষরফা না হলে আমাদের এদিককার প্রচেষ্টা কিছু কম হলেও চলবে, এবং আমাদের কাজ হয়ে উঠবে অনেক পরিমাণে সহজ। এপর্য্যন্ত আপোষের কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। এবং আমাদের পক্ষে সব চেয়ে উৎসাহজনক ব্যাপার এই, এপর্য্যন্ত মহাত্মা গান্ধী যেসব বিবৃতি দিয়েছেন, তার মূল বক্তব্য একই। তিনি বলেছেন, প্রায় দুই বৎসর পূর্ব্বে “ভারত ছাড়ো” প্রস্তাবের উদ্যোক্তা হিসাবে তিনি যে মনোভাব অবলম্বন করেছিলেন, সে মনোভাব পরিবর্ত্তনের কোন কারণ তিনি দেখতে পাচ্ছেন না। অতএব এ অবস্থায় কংগ্রেস এবং বৃটিশ গবর্নমেণ্টের মধ্যে আপোযের কোন সম্ভাবনাই নেই, এবং ফলে আমাদের কাজ অনেকটা সহজ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

 ভারতের স্বাধীনতা লাভের উপায় এখন দেখা যাচ্ছে একটি—সে উপায় যুদ্ধ করা। যাঁরা একদিন অহিংস সংগ্রামের দ্বারা স্বাধীনতা অর্জ্জন করবেন বলে আশা করেছিলেন তাঁরা আজ বুঝতে পারছেন, শক্তি প্রকাশ না করতে পারলে, তারা কখনও ভারতীয় দাবীর কাছে মাথা নত করবে না। কাজেই জনগণ যদি স্বাধীন হতে চায়, তবে তাদের এগিয়ে আসতে হবে, এ সংগ্রামকে সমর্থন করতে হবে।

 আর একটা প্রশ্ন সকলের মনে জাগছে—কংগ্রেসের সঙ্গে বৃটিশ গবর্নমেণ্টের আপোষের সম্ভাবনা আছে কিনা। আমার মতে এ প্রশ্নের উত্তর—এইতত্ত্বের দিক থেকে আপোষরফার সম্ভাবনা সর্ব্বদাই আছে। বাস্তব বিচারে আপোষ প্রায় অসম্ভব। আমি যখন বলি যে তত্ত্বের দিক থেকে কংগ্রেস এবং বৃটিশ গবর্নমেণ্টের আপোষ সম্ভব, তখন

৪২