পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কিন্তু ভারতীয় জনগণ ভারতের মাটিতে যখন নিজ চোখেই তাদের দেখতে পাবে, তখন তারা বিস্মিত হয়ে যাবে।

 আমি আজাদ-হিন্দ ফৌজ সম্বন্ধে অন্য একটি বিষয়ের উল্লেখ করতে চাই। সেটা হচ্ছে এই, যদিও কোন কোন অত্যাবশ্যক ব্যাপারে আমরা জাপানী গবর্নমেণ্ট এবং সেনাবাহিনীর সাহায্য নিতে বাধ্য হই, তবু আজাদ-হিন্দ ফৌজ প্রধানতঃ ভারতীয়দের অর্থ এবং সামর্থ্যের দ্বারা পরিপুষ্ট এবং গঠিত। গতবৎসর আমি পূর্ব্ব-এশিয়ার স্বদেশবাসীদের কাছে যে অর্থ দাবী করেছিলাম, পেয়েছি তার চেয়ে অনেক বেশী। এখনও প্রচুর পরিমাণে অর্থ আসছে এবং যতদিন আমাদের মুক্তি-সংগ্রাম শেষ না হবে ততদিন এই রকম আসতে থাকবে। শুধু তাই নয়, সমগ্র পূর্ব্ব-এশিয়া থেকে ভারতীয় বণিক-সম্প্রদায় এবং ব্যবসায়ীরা আমাদের সেনাদলের জন্যে প্রচুর দ্রব্য সরবরাহ করছেন। অতএব ভারতীয় জনগণের এখন নিজেদের সেনাবাহিনী আছে—সে বাহিনী ভারতীয়দের দ্বারা সংগঠিত, ভারতীয় অর্থ-সামর্থ্যে পরিপুষ্ট, ভারতীয়দের দ্বারা শিক্ষিত এবং ভারতীয় অফিসারদের নেতৃত্বে যুদ্ধরত। এখন শুধু ভারত থেকে শেষ বৃটিশটিকে বিতাড়িত না করতে পারা পর্য্যন্ত দুর্দ্দম শৌর্য্যে এবং অনমনীয় দৃঢ় সঙ্কল্পে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।

 উপসংহারে আমি বলতে চাই, আজাদ-হিন্দ ফৌজ সহায়বিহীন প্রতিষ্ঠান নয়। এই প্রতিষ্ঠানের পিছনে আছে পূর্ব্ব-এশিয়ার ত্রিশ লক্ষ ভারতবাসী যারা ভারতীয় প্রচেষ্টায় ভারত স্বাধীন করার জন্যে সামগ্রিক সমর-সজ্জার কর্ম্ম-তালিকা অনুসরণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাছাড়া, আজাদ-হিন্দ ফৌজের সংবাদবাহক এবং চরেরা ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে এবং সেখানে নীরবে কাজ করে চলেছে—যাতে আমাদের সামরিক অভিযানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ভারতে সমগ্র দেশব্যাপী বিপ্লবের আগুন জ্বলে ওঠে। এই ভাবে পূর্ব্ব-এশিয়ার দূরতম কোণ থেকে

৪৯