পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এই অফিসারটি আজাদ হিন্দ ফৌজের সদস্যদের পক্ষে আদর্শ-স্থানীয় তিনি সমগ্র অভিযানে অপূর্ব্ব স্বদেশ প্রেম, সাহস ও কর্ত্তব্যনিষ্ঠা দেখিয়ে আমাদের প্রশংসাভাজন হয়েছেন। ১৯৪৪ এর ৫ই ফেব্রুয়ারী বিপক্ষদলের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনি অভূতপূর্ব সাহস, বুদ্ধি এবং কর্ম্মতৎপরতা দেখিয়েছিলেন। এই কৃতিত্বের জন্য তাঁকে ব্যক্তিগত সাহসের পরিসূচক প্রথম শ্রেণীর পদক “বীর-এ-হিন্দ” দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছিল। ৫ই ফেব্রুয়ারীর এই ঘটনার পর ১৬ই ফেব্রুয়ারী এবং ২০শে ও ২১শে ফেব্রুয়ারীর অপর দুইটি সংঘর্ষেও লেঃ পিয়ার সিং কৃতিত্ব প্রদর্শন করে ছিলেন। শেষের সংঘর্ষটিতে তিনি ট্রেঞ্চ সর্টারের (এক প্রকারের ক্ষুদে কামান) গুলিতে আহত হয়েছিলেন; তাঁর দুটি পা-ই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিছুকাল তাঁর অবস্থা খুবই উদ্বেগজনক হয়ে দাড়িয়েছিল এবং তাঁকে রণাঙ্গন থেকে সরিয়ে আনতে হয়েছিল। বর্ত্তমানে আমাদের হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে এবং আমি সানন্দে আপনাদের জানাচ্ছি যে, তাঁর অবস্থা এখন অনেকটা ভাল।

 আজ আমি লেঃ পিয়ারা সিংকে পদক দিয়ে বিভূষিত করছি। এই পদক তিনি নিজের রক্ত দিয়ে অর্জ্জন করেছেন এবং তিনি এ পদকের যোগ্যতম অধিকারী। এ রকম সাহসী অফিসারকে সম্মানিত করে আমি নিজেকে, আমার সেনাবাহিনীকে এবং আমার গবর্নমেণ্টকে সম্মানিত করছি।

 এই প্রসঙ্গে আমাদের সেনাদলের মনোবল সম্বন্ধে কয়েকটি কথা বলতে চাই। আরাকান-অভিযানের পর ইন্দোব্রহ্ম-সীমান্তের অন্য কয়েকটি অঞ্চলে— বিশেষ করে হাকা, টিড্ডিম এবং কালাদন অঞ্চলে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তারপরই গত মার্চ্চের মাঝামাঝি এসেছিল গৌরবময় মুহূর্ত্ত, যখন আমাদের সাহসী সেনাবাহিনী নিপ্পন-বাহিনীর পাশাপাশি ভারত-সীমান্ত অতিক্রম করে মণিপুর এবং আসামে প্রবেশ করে।

৫২