পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

করবে না। তা সত্ত্বেও, দেশের মত বিদেশী ভারতীয়দের মধ্যেও পথের বিভিন্নতা আছে। ১৯২৯-এর ডিসেম্বর মাসে আপনার উদ্যোগে লাহাের কংগ্রেসে স্বাধীনতা-প্রস্তাব ওঠার পর থেকে, ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সমস্ত সদস্যের সম্মুখে সাধারণ লক্ষ্য একটি। বিদেশপ্রবাসী ভারতীয়দের কাছে আপনি হচ্ছেন আমাদের দেশের বর্ত্তমান গণ-চেতনার স্রষ্টা। পৃথিবীর সামনে তাঁদের প্রচার-কার্য্যে তারা আপনাকে আপনার প্রাপ্য সকল মর্য্যাদাই দেন। বিশ্বের জনসাধারণের কাছে আমরা ভারতীয় জাতীয়তাবাদীরা এক—আমাদের জীবনের লক্ষ্য এক, আকাঙ্ক্ষা এক এবং কর্ম্মোদ্যোগও এক। ১৯৪১-এ ভারত ত্যাগের পর বৃটিশ প্রভাবমুক্ত যে সব দেশে আমি ঘুরেছি, সে সব দেশে আপনাকে সবাই এত শ্রদ্ধা করে যে, গত এক শত বৎসরের মধ্যে আর কোন ভারতীয় রাজনৈতিক নেতা সেরূপ শ্রদ্ধা পান নি। প্রত্যেক জাতিরই নিজের নিজের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি আছে, এবং রাজনৈতিক সমস্যাকে বিচার করার বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গী আছে। কিন্তু এর ফলে যে মানুষটি এত ভালভাবে তাঁর জাতির সেবা করেছেন এবং সাহসিকতার সঙ্গে সারাজীবন একটি প্রথম শ্রেণীর আধুনিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, তাঁর গুণ-বিচারে কিছুমাত্র তারতম্য হয় না। কার্য্যতঃ যে সব দেশ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের বন্ধু বলে ভাণ করে, সে সব দেশের চেয়ে যে সব দেশ বৃটিশ সাম্রাজ্য-বিরােধী, সেই সব দেশেই আপনার মূল্য এবং কৃতিত্বের মূল্য দেওয়া হয় বেশী। ভারত বহির্ব্বর্ত্তী স্বদেশপ্রেমিক ভারতীয়রা এবং ভারতের স্বাধীনতার বিদেশী বন্ধুরা আপনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পােষণ করেন; আর সেই শ্রদ্ধা শত গুণে বেড়ে গিয়েছিল যখন ১৯৪২-এর আগষ্ট মাসে আপনি বীরের মতাে “ভারত ছাড়াে” প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন।

 আমি যখন ভারতে ছিলাম তখনকার অভিজ্ঞতা থেকে—ভারতের

৫৫