পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অনেকেই এখনও যা বুঝতে পারছেন না, সেটা হচ্ছে এই যে পূর্ব্ব-এশিয়ায় যুদ্ধারম্ভের পর থেকে সাধারণ ভাবে পৃথিবী সম্বন্ধে এবং বিশেষ করে এশিয়ার জাতিপুঞ্জ সম্বন্ধে জাপানের মনোভাবে পরিপূর্ণ বিপ্লবাত্নক পরিবর্ত্তন এসেছে। শুধু যে জাপানী গবর্নমেণ্টেরই এ পরিবর্ত্তন হয়েছে তা নয়, জাপানী জনগণেরও হয়েছে। জাপানী জনগণের মনে এসেছে নতুন চেতনা। বর্ত্তমানে ফিলিপাইন ব্রহ্ম এবং ভারত সম্বন্ধে জাপানের যে মনোভাব, তার মূলে আছে এই পরিবর্ত্তন। চীনেও জাপানের নতুন নীতির মূলে এই একই জিনিষ। জাপান পরিদর্শনের পরে এবং বর্ত্তমান জাপানের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ স্থাপনের পরে আমার এই বিশ্বাস হয়েছে যে, এশিয়া সম্বন্ধে জাপানের বর্ত্তমান নীতি ধাপ্পাবাজি নয়—এর মূলে আছে আন্তরিকতা। সমগ্র জাতির মনে নতুন চেতনা সঞ্চারিত হবার উদাহরণ ইতিহাসে এই প্রথম নয়। ইতিপূর্ব্বে ফরাসী বিপ্লবের সময় ফ্রান্সে এবং বলশেভিক বিপ্লবের সময় রাশিয়ায় আমরা এর সাক্ষাৎ পেয়েছি। ১৯৪৩-এর নবেম্বর মাসে দ্বিতীয়বার জাপান পরিদর্শনের পর আমি ফিলিপাইন পরিদর্শন করেছিলাম, ফিলিপিনো নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলাম এবং নিজের চোখে সব কিছু দেখেছিলাম। আমি ব্রহ্মে কিছুকাল ধরে আছি এবং স্বাধীনতা-ঘোষণার পর সে দেশের অবস্থা দেখার স্বচক্ষে সুযোগ পেয়েছি। জাপানের নতুন নীতি প্রকৃত, না নিছক ধাপ্পাবাজি—তা দেখবার জন্য আমি চীনেও গিয়েছিলাম। জাপান এবং চীনের জাতীয় গবর্নমেণ্টের মধ্যে সর্ব্বশেষ চুক্তির ফলে চীনের জনসাধারণ যা যা দাবী করেছিল কার্য্যতঃ তার সব কিছুই তারা পেয়েছে। এই চুক্তিতে জাপান যুদ্ধশেষে চীন থেকে তার সৈন্যদল সরিয়ে নেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। চুংকিং-চীন যুদ্ধ করছে কেন? কেউ কি বিশ্বাস করতে পারে, বৃটেন আমেরিকা নিছক পরোপকার-প্রবৃত্তি থেকেই চুংকিং-চীনকে সাহায্য

৬৩