পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

করেছে? চুংকিংকে জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর জন্যে বৃটেন ও আমেরিকা এখন যে সাহায্য করছে, তার বদলে তারা কি প্রতিদান চাইবে না? আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, জাপানের প্রতি অতীত ঘৃণা ও বিদ্বেষের দরুন চুংকিং নিজেকে বৃটেন ও আমেরিকার কাছে বন্ধক দিচ্ছে। যতদিন পর্য্যন্ত চীনের প্রতি জাপান তার বর্ত্তমান নীতির প্রবর্ত্তন করে নি, ততদিন পর্য্যন্ত জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে বৃটিশ ও মার্কিণ সাহায্য চাইবার পিছনে তবু কিছুটা যুক্তি ছিল। কিন্তু বর্ত্তমানে চীন-জাপানের সম্বন্ধে সম্পূর্ণ নতুন অধ্যায়ের সৃষ্টি হওয়ায় চুংকিং-এর পক্ষে জাপানের বিরুদ্ধে অর্থহীন সংগ্রাম চালানো কোনক্রমেই সমর্থন করা যায় না। এটা চীনের জনগণের পক্ষে মঙ্গলজনক নয়—এশিয়ার পক্ষেও মঙ্গলজনক নয়। ১৯৪২-এর এপ্রিল মাসে আপনি বলেছিলেন, আপনার যদি স্বাধীনতা থাকত তবে আপনি চীন এবং জাপানের মধ্যে একটা বোঝাপড়ার চেষ্টা করতেন। আপনার সে উক্তি ছিল, দুর্লভ রাজনীতিবোধের পরিচায়ক। চীনের বর্ত্তমান বিশৃঙ্খলার দরুন মূলতঃ ভারতের দাসত্বই দায়ী। ভারতের উপর বৃটিশ আধিপত্য আছে বলেই ইঙ্গ-মার্কিণ শক্তিদ্বয় ধাপ্পা দিয়ে চুংকিংকে আশা দিল যে, জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর জন্যে চীনে যথেষ্ট সাহায্য আমদানী করা সম্ভব। মহাত্মাজী, আপনি ঠিকই ভেবেছিলেন, স্বাধীন ভারত জাপান এবং চীনের মধ্যে শান্তিস্থাপনের চেষ্টা করত। আমি বলতে চাই, ভারত স্বাধীনতা পেলে চুংকিং বর্ত্তমানে যে মূর্খতা করছে সে সম্বন্ধে তার চোখ খুলে যাবে, এবং তার ফলে চুংকিং ও জাপানের মধ্যে একটা সম্মানজনক আপোষরফা হবে! আমি পূর্ব্ব-এশিয়ায় আসার পর থেকে এবং চীন-পরিদর্শনের পর থেকে, আমি চীনের সমস্যা আরও গভীর ভাবে অনুধাবন করতে পেরেছি। আমি দেখছি, চুংকিং-এ এক-নায়কত্বের শাসন চলছে। যদি ন্যায়সঙ্গত কারণে হয়, তা হলে ব্যক্তিগত ভাবে আমার এক-নায়কত্বের

৬৪