পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বিরুদ্ধে কোন আপত্তি নেই। কিন্তু চুংকিং-এ যে এক-নায়কত্ব বিরাজমান তার উপর বিদেশী মার্কিণ-প্রভাব সুস্পষ্ট। দুঃখের বিষয়, ইঙ্গ-মার্কিণ শক্তিদ্বয় চুংকিং-এর শাসকগোষ্ঠীকে এই বলে প্রতারিত করতে পেরেছে যে, কোন প্রকারে জাপানকে যদি পরাজিত করা যায়, তবে এশিয়ায় চীনই হবে প্রধান শক্তি। আসল ব্যাপার কিন্তু এই, জাপান যদি কোনক্রমে পরাজিত হয় তবে চীন সম্পূর্ণ আমেরিকান প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণাধীনে চলে যাবে। সেটা চীনের পক্ষেও যেমন করুণ হবে, সমগ্র এশিয়ার পক্ষেও তেমনই করুণ হবে। জাপানের পরাজয়ের পর এশিয়ায় সর্ব্বশ্রেষ্ঠ রাষ্ট্র হবার মিথ্যা আশায় চুংকিং-এর শাসকগোষ্ঠী হোয়াইট হাউস এবং হোয়াইট হলের শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে অপবিত্র মৈত্রীবন্ধনে বাঁধা পড়েছে। ভারতে চুংকিং গবর্ণমেণ্ট যে প্রচারকার্য্য চালায় এবং ভারতীয়দের হৃদয়াবেগে নাড়া দিয়ে যে ভাবে তাদের সহানুভূতি লাভের চেষ্টা করে তার কিছু কিছু সংবাদ আমি রাখি। কিন্তু ওয়াল ষ্ট্রীট এবং লম্বার্ড ষ্ট্রীটের কাছে যে চুংকিং নিজেকে বন্ধক রেখেছে, সে আর ভারতীয় জনগণের সহানুভূতি পাবার যোগ্য নয়—বিশেষ করে চীনের প্রতি জাপানের নতুন নীতি প্রবর্ত্তনের পরে।

 মহাত্মাজী, ভারতীয় জনগণ মৌখিক প্রতিশ্রুতি সম্বন্ধে কত গভীরভাবে সন্দিহান, সকলের চেয়ে আপনিই সেকথা জানেন বেশী ভাল করে। জাপানের নীতি-ঘোষণা যদি নিছক প্রতিশ্রুতিমাত্র হত, তবে আমি কিছুতেই জাপানের দ্বারা প্রভাবিত হতাম না। কিন্তু আমি নিজের চোখে দেখেছি, কিভাবে এই বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যেও জাপান ফিলিপাইন ব্রহ্ম এবং জাতীয় চীনের মতো দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্ত্তন সাধন করেছে। জাপানের যিনি নেতা ও প্রধান মন্ত্রী সেই জেনারেল তোজো প্রতিটি কথার মর্য্যাদা রক্ষা করেন ও তাঁর ঘোষণার সঙ্গে কাজের পরিপূর্ণ সঙ্গতি বিদ্যমান। নৈতিক বিচারে জাপানের

৬৫