পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হয়ে এ উৎপাদন কমে যাবে। আর জার্ম্মানীর কথা বলতে গেলে সাম্প্রতিক বিমান আক্রমণ সত্ত্বেও তার যুদ্ধ-পণ্যোৎপাদন তেমন কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয় নি। কার্যতঃ কোন কোন বিষয়ে উৎপাদন বেড়েই গেছে। কাজেই জার্মমান যুদ্ধ-পণ্যোৎপাদন যুদ্ধ-পরিস্থিতির সঙ্গে তাল রেখে চলতে পারবে, এ সম্ভাবনা পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান।

 ইউরোপের অবস্থা অতি সংক্ষেপে আমি এখন বর্ণনা করছি:

 পূর্ব্ব রণাঙ্গনে জার্ম্মানদের পক্ষে রাশিয়াকে পরাজিত করা সম্ভব হয় নি। ঠিক সেইভাবে রুশদের পক্ষেও জার্ম্মানীকে পরাজিত করা সম্ভব হবে না। আমার কাছে যেটা খুব বেশী সম্ভব বলে মনে হয় সেটা হচ্ছে এই যে, এক ধরণের অচল অবস্থার সৃষ্টি হবে—যার ফলে উভয় পক্ষই হয়তো পরিখা খুঁড়ে মুখোমুখি অপেক্ষা করবে।

 পশ্চিম রণাঙ্গনে কিন্তু কিছুকাল পরেই জার্ম্মানীর অনুকূলে যুদ্ধের গতি ফিরবে। তখন জার্ম্মানদের পক্ষে ফ্রান্সে ইঙ্গ-মার্কিণদের প্রত্যাঘাত করা সম্ভব হবে। ইটালীতে জার্ম্মানরা উপদ্বীপভাগ ত্যাগ করে উত্তর-ইটালীতে পশ্চাদপসরণ করবার পূর্ব্বে চুড়ান্ত রকম আত্মরক্ষামূলক সংগ্রাম করবে। উত্তর-ইটালীতে তারা দৃঢ়সংবদ্ধ হয়ে অবস্থান করবে; সেখান থেকে তাদের হটিয়ে দেওয়া ইঙ্গ-মার্কিণদের পক্ষে সম্ভব হবে না।

 ইটালী ও ফরাসী রণাঙ্গন সম্বন্ধে আমার দৃঢ়বিশ্বাস, মিত্রপক্ষের মনোবল ক্ষুণ্ণ হতে আরম্ভ না হওয়া পর্য্যন্ত জার্ম্মানরা এ দুটি রণাঙ্গনে ঠিক থাকতে পারবে। জার্ম্মান-মনোবল ভেঙে যাবার কোন সম্ভাবনা আমি দেখি না। ইতিমধ্যেই জার্ম্মানীর উপর বিমান-আক্রমণ শিথিল হতে শুরু করেছে এবং উড়ন্ত-বোমার সাহায্যে জার্ম্মানী নূতন আক্রমণাত্মক অভিযান চালিয়েছে। জার্ম্মান মনোবলের উপর এর প্রভাব হয়েছে চমৎকার। পরের কয়েক মাস জার্ম্মানীর পক্ষে সঙ্কটজনক হবে। কিন্তু তারপর জার্ম্মানীর আবার সুদিন আসবে। আমার এই

৮০