পঞ্চম পরিচ্ছেদ।
কলিকাতার ক্যানিংষ্ট্রীট পাঠকগণের মধ্যে কাহারও অপরিচিত নহে। ঐস্থান বাণিজ্য কার্য্যের নিমিত্ত প্রসিদ্ধ। ঐ রাস্তার দুই ধারে সারি সারি দোকান, সূর্য্যোদয়ের পর হইতে রাত্রি নয়টা দশটা পর্য্যন্ত ঐ সকল দোকানে যেমন কেনা-বেচার বিরাম নাই, সেইরূপ লোক যাতায়াতেরও কিছুমাত্র কমবেশী নাই। দোকানগুলি দেখিয়া নিতান্ত সামান্য দোকান বলিয়া অনুমান হয়, কিন্তু যাঁহারা উহাদিগের ভিতরের অবস্থা জানেন, তাঁহারা বলিয়া থাকেন, ঐ সকল দোকানের মূলধন কম নহে, ও উহাদিগের নিকট হইতে যে কোন দ্রব্য যত পরিমাণ চাহিবে, তৎক্ষণাৎ তাহা প্রাপ্ত হইবে। দোকানের সুদূরবর্ত্তী স্থানে গলির ভিতর প্রত্যেক দোকানদারের দুই চারিটী করিয়া গুদাম আছে, ঐ সকল গুদাম দোকানের বিক্রেয় দ্রব্যের দ্বারা পরিপূর্ণ, যেমন কোন একটী দ্রব্য কম পড়িতেছে, অমনি ঐ সকল গুদাম হইতে ঐ সকল দ্রব্য আনাইয়া ঐ সকল স্থান পূর্ণ করিয়া রাখা হইতেছে।
ঐ স্থানের একজন ব্রাহ্মণ দোকানদারের সহিত আমার পরিচয় ছিল, পরিচয়ই বা বলি কেন, তাহার সহিত আমার বিশেষ বন্ধুত্ব ছিল। সময় সময় আমি তাহার দোকানে গিয়া বসিতাম ও দোকানের বেচা-কেনার অবস্থা দেখিতে দেখিতে দুই এক ঘণ্টা অতিবাহিত করিতাম। যে দিবস মস্তক-বিবর্জ্জিত স্ত্রীলোকের মৃতদেহ পুষ্করিণীর মধ্য হইতে আমরা প্রাপ্ত হইয়া ছিলাম, তাহার তিন চারি দিবস পরে আমি আমার সেই বন্ধুর