পাতা:দীর্ঘকেশী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দীর্ঘকেশী।
৩৯

পারিলেন যে, ঐ স্ত্রীলোকটা যদিও চামড়ওয়ালা কর্তৃক রক্ষিতা ছিল, তথাপি দুশ্চরিত্রা স্ত্রীলোকের অভাব যেরূপ কিছুতেই পরিবর্ত্তিত হয় না, সেইরূপ তাহার স্বভাবেরও কিছুমাত্র পরিবর্ত্তন হইয়াছিল না। চামড়াওয়ালা তাহাকে বিশেষরূপ যত্ন করিত, তাহার নিমিত্ত বিস্তর অর্থ ব্যয় করিত, তথাপি সে তাহার অভাবের গুণে গুপ্তভাবে অপর লোককে তাহার ঘরে চামড়া ওয়ালার অবর্ত্তমানে স্থান প্রদান করিত। অর্থে না হয় কি? সেই অর্থের গুণে দাস-দাসী ও দরোয়ান প্রভৃতির মুখ বন্ধ করিত, চামড়ওয়ালার কাণে কোন কথা প্রবেশ করিত না। কিন্তু দৈবের ঘটনা কেহ কখন রোধ করিতে পারে না। হঠাৎ একদিবস যে সময় সেই লোকটা সেই স্ত্রীলোকের ঘরে উপবেশন করিয়া আমোদ-প্রমোদে নিযুক্ত ছিল, অথচ সেই সময় ঐ চামড়াওয়ালার সেই স্থানে আসিবার কোন কারণই ছিল না, সেই সময় কোন কার্য্য উপলক্ষে সেই চামড়ওয়ালা সেই স্থানে হঠাৎ উপস্থিত হইল ও সমস্ত অবস্থা স্বচক্ষে দেখিতে পাইল। চামড়ওয়ালা যখন সেই স্থানে হঠাৎ আসিয়া উপস্থিত হইল, সেই সময় ঐ বাড়ীর চাকর চাকরাণী ও দারোয়ান এরূপ ভাবে অন্যমনস্ক ছিল যে, তাহার আগমন সংবাদ কোনরূপেই সেই স্ত্রীলোকটীকে প্রদান করিতে পারিল না, চামড়া ওয়ালা একেবারে গিয়া সেই স্থানে উপস্থিত হইল কিন্তু সেই অপরিচিত লোকটা পলায়ন করিয়া যদি আপন প্রাণ রক্ষা করিল, ঐ স্ত্রীলোকটা তাহার হস্ত হইতে আর কোনরূপেই পরিত্রাণ পাইল না, ইহজীবনের নিমিত্ত তাহার ইহলীলা সেইখানেই শেষ হইয়া গেল।

 চামড়াওয়ালার লোকজনের অভাব ছিল না, সুতরাং রাত্রি-