পাতা:দীর্ঘকেশী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দীর্ঘকেশী।

পারে না। যাহা হউক, উহা উপরে উঠাইয়া ভালরূপ পরীক্ষা করিয়া না দেখিলে কোনরূপ মতামত প্রকাশ করা যাইতে পারে না।

 মনে মনে এইরূপ ভাবিতেছি, এমন সময়ে ডোম ঐ মস্তক পুষ্করিণীর তীরে উঠাইয়া আনিল। দেখিলাম, উহা প্রকৃতই একটী স্ত্রীলোকের মস্তক, কোন তীক্ষ্ণধার অস্ত্রের দ্বারা উহাকে উহার দেহ হইতে বিচ্ছিন্ন করা হইয়াছে, ও উহার নাক মুখ প্রভৃতি স্থানে এরূপ ভাবে অস্ত্রাঘাত করা হইয়াছে যে, উহার মুখ দেখিয়া সহসা কেহই চিনিতে পারিবে না যে উহা কাহার মস্তক। তথাপি ঐ মস্তকটী দেখিয়া অনুমান হয় যে, ঐ স্ত্রীলোকটী কোন দরিদ্র ঘরের কন্যা বা বনিতা ছিল না, ও বিশেষ রূপবতীই ছিল বলিয়া বিবেচনা হয়। মস্তকের কেশরাশি অতিশয় ঘন নিবিড় কৃষ্ণবর্ণ ও দীর্ঘ। সদা সর্ব্বদা স্ত্রীলোকগণের মস্তকে যেরূপ দীর্ঘ কেশ দেখিতে পাওয়া যায়, ইহা তাহা অপেক্ষা অনেক দীর্ঘ অর্থাৎ মাপিলে কোনক্রমেই চারিফিটের কম হইবে না। উহার চুল আলুলায়িত কিন্তু দুই তিনখানি ইষ্টক ঐ চুলের সহিত আবদ্ধ রহিয়াছে। দেখিলে অনুমান হয় যে, যাহাতে ঐ মস্তক জলের উপরে ভাসিয়া উঠিতে না পারে তাহার জন্যই ইষ্টক বাঁধিয়া উহা পুষ্করিণীর অগাধ জলে নিক্ষেপ করা হইয়াছে।

 মস্তকটী পুষ্করিণীর ভিতর প্রাপ্ত হওয়ায় স্বভাবতই মনে হইল যে, মৃতদেহটীও নিশ্চয়ই ঐরূপে পুষ্করিণীর মধ্যে নিক্ষেপ করা হইয়াছে। মনে মনে ঐরূপ ভাবিয়া যাহাতে ঐ পুষ্করিণীর মধ্যে উত্তমরূপে অনুসন্ধান করা যাইতে পারে, তাহার উদ্যোগ করিতে প্রবৃত্ত হইলাম। সেই সময় পুষ্করিণীর ভিতর অনুসন্ধান করিতে