পাতা:দীর্ঘকেশী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারােগার দপ্তর, ১৫৯ সংখ্যা।

হইলে জাল ও জেলিয়ার আবশ্যক হইত, সুতরাং অনুসন্ধান করিয়া তাহাই সংগ্রহ করিতে হইল। কতকগুলি জেলিয়াকে ধরিয়া বৃহৎ বৃহৎ জাল সমেত ঐ পুষ্করিণীর ভিতর নামাইয়া দিলাম। পুষ্করিণীটী বহু পুরাতন ছিল, সুতরাং উহার জল নানারূপ পুরাতন জঙ্গলে পূর্ণ ছিল। বহু বৎসরের মধ্যে ঐ পুষ্করিণীর যে কোনরূপ পঙ্কোদ্ধার হইয়াছিল ইহা অনুমান হয় না। একজন জেলিয়া ঐ পুষ্করিণী জমা লইত, সে মধ্যে মধ্যে উহা হইতে মৎস্য ধরিয়া লইলেও সম্পূর্ণরূপ মৎস্য শূন্য করিতে পারিত না, বা ঐ পুষ্করিণী কোনরূপেই পরিষ্কার রাখিতে সমর্থ হইত না। জেলিয়াগণ তাহাদের সাধ্যমত ঐ পুষ্করিণীতে জাল ফেলিয়া বিশেষরূপ অনুসন্ধান করিল, কিন্তু মৃতদেহের কোনরূপই সন্ধান করিয়া উঠিতে পারিল না। এইরূপ গোলযোগে প্রায় সমস্ত দিবস অতিবাহিত হইয়া গেল, কোনরূপেই আমাদিগের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করিতে সমর্থ হইল না।

 আমরা যে স্ত্রীর মুণ্ড প্রাপ্ত হইয়াছিলাম, তাহা দেখিয়া কাহারও সাধ্য ছিল না যে, চিনিতে পারে উহা কাহার মস্তক। অনেক লোক ঐ ছিন্নমুণ্ড দর্শন করিল, কিন্তু কেহই চিনিয়া উঠিতে পারিল না, বা অনুমান করিতে পারিল না যে, উহা কাহার মুণ্ড! উহা যে কাহার মন্তক, তাহা জানিবার উপায়ের মধ্যে কেবল একমাত্র তাহার দীর্ঘ কেশরাশী। এখন আমাদের একমাত্র ভরসার মধ্যে এই রহিল যে, যদি কেহ বলে,—কোন দীর্ঘকেশী সুন্দরীকে পাওয়া যাইতেছে না, তাহা হইলে আমাদের কার্য্য সম্পূর্ণরূপে সিদ্ধ হউক বা না হউক, অনুসন্ধান করিবার কতকটা রাস্তা হইবে। মনে মনে এইরূপ সিদ্ধান্ত করিয়া,