পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই বোন
১০১

দিয়েছে যে, তার অবর্তমানে সবচেয়ে যেটা সান্ত্বনার বিষয় সে ঊর্মিকে নিয়েই। এ সংসারে অন্য কোনাে মেয়ের আবির্ভাব কল্পনা করতেও দিদিকে বাজত, অথচ শশাঙ্ককে যত্ন করবার জন্যে কোনাে মেয়েই থাকবে না এমন লক্ষ্মীছাড়া অবস্থাও দিদি মনে মনে সইতে পারত না। ব্যবসার কথাও দিদি ওকে বুঝিয়েছে, বলেছে, যদি ভালােবাসায় বাধা পায় তাহলে সেই ধাক্কায় ওর কাজকর্ম সব যাবে নষ্ট হয়ে। ওর মন যখন তৃপ্ত হবে তখনি আবার কাজকর্মে আপনি আসবে শৃঙ্খলা।

 শশাঙ্কের মন উঠেছে মেতে। ও এমন একটা চন্দ্রলােকে আছে যেখানে সংসারের সব দায়িত্ব সুখতন্দ্রায় লীন। আজকাল রবিবার-পালনে বিশুদ্ধ খ্রীস্টানের মতােই ওর অস্খলিত নিষ্ঠা। একদিন শর্মিলাকে গিয়ে বললে, “দেখাে, পাটের সাহেবদের কাছে তাদের স্টীমলঞ্চ পাওয়া গেছে,— আজ রবিবার, মনে করছি ভােরে ঊর্মিকে নিয়ে ডায়মণ্ডহার্বারের কাছে যাব, সন্ধ্যার আগেই আসব ফিরে।”

 শর্মিলার বুকের শিরাগুলাে কে যেন দিলে মুচড়ে, বেদনায় কপালের চামড়া উঠল কুঞ্চিত হয়ে। শশাঙ্কের