পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই বোন
১০৩

একটা কিছু শখের জিনিস কিনে দিত। শর্মিলা ভেবেছিল এবারেও নিশ্চয় দেবে, কাল পাব জানতে।

 আজ ও আর কিছুই সহ্য করতে পারছে না। ঘরে যখন কেউ নেই তখন কেবলি ব’লে ব’লে উঠছে, “মিথ্যে, মিথ্যে, মিথ্যে, কী হবে এই খেলায়।”

 রাত্রে ঘুম হােলাে না। ভােরবেলা শুনতে পেলে মােটরগাড়ি দরজার কাছ থেকে চলে গেল। শর্মিলা ফুঁপিয়ে উঠে কেঁদে বললে, “ঠাকুর, তুমি মিথ্যে।”


 এখন থেকে বােগ দ্রুত বেড়ে চলল। দুর্লক্ষণ যেদিন অত্যন্ত প্রবল হয়ে উঠেছে সেদিন শর্মিলা ডেকে পাঠালে স্বামীকে। সন্ধ্যেবেলা, ক্ষীণ আলাে ঘরে, নার্সকে সংকেত করলে, চলে যেতে। স্বামীকে পাশে বসিয়ে হাতে ধরে বললে, “জীবনে আমি যে-বর পেয়ে ছিলুম ভগবানের কাছে, সে তুমি। তার যােগ্য শক্তি আমাকে দেননি। সাধ্যে যা ছিল করেছি। ত্রুটি অনেক হয়েছে, মাপ করো আমাকে।”

 শশাঙ্ক কী বলতে যাচ্ছিল, বাধা দিয়ে বললে,—“না, কিছু বােলো না। ঊর্মিকে দিয়ে গেলুম তােমার