পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই বোন

সত্ত্বেও যে ইংরেজ যুবক বিরল গুণফরেখা নিয়ে তার আসন দখল করলে কতৃপক্ষের উধ্বতন কর্তার সম্পৰ্ক ও সুপারিশ বহন ক’রে তার এই অভাবনীয় আবির্ভাব।

 শশাঙ্ক বুঝে নিয়েছে এই অৰ্বাচীনকে উপরের আসনে বসিয়ে নিচের স্তরে থেকে তাকেই কাজ চালিয়ে নিতে হবে। কতৃপক্ষ পিঠে চাপড় মেরে বললে, “ভেরি সরি মজুমদার, তোমাকে যত শীঘ্র পারি উপযুক্ত স্থান জুটিয়ে দেব।” এরা দুজনেই এক ফ্রীমেসন লজের অন্তভুক্ত।

 তবু আশ্বাস ও সান্তনা সত্ত্বেও সমস্ত ব্যাপারটা মজুমদারের পক্ষে অত্যন্ত বিস্বাদ হয়ে উঠল। ঘরে এসে ছোটোখাটো সব বিষয়ে খিটখিটি শুরু করে দিলে। হঠাৎ চোখে পড়ল তার আপিসঘরের এককোণে কুল, হঠাৎ মনে হোলো চৌকির উপরে যে সবুজ রঙের ঢাকাটা আছে সে রঙটা ও দু-চক্ষে দেখতে পারে না। বেহাৱা বারান্দা ঝাড় দিচ্ছিল, ধুলো উড়ছে ব’লে তাকে দিল একটা প্রকাণ্ড ধমক। অনিবার্য ধুলো রোজই ওড়ে কিন্তু ধমকটা সদ্য নুতন।

 অসন্মানের খবরটা স্ত্রীকে জানালে না। ভাবলে যদি কানে ওঠে তাহলে চাকরির জালটাতে আরো।