পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
দুই বোন

 বাড়িটা যখন শেষ হয়ে গেল তখন স্থাবর পদার্থটার প্রতি শর্মিলার রুদ্ধ স্নেহের উদ্যম ছাড়া পেলে। সুবিধা এই যে ইঁটকাঠের দেহটাতে ধৈর্য অটল। গোছানােগাছানাে সাজানােগোজানাের মহােদ্যমে দুই-দুই জন বেহারা হাঁপিয়ে উঠল, একজন দিয়ে গেল জবাব। ঘরগুলাের গৃহসজ্জা চলছে শশাঙ্ককে লক্ষ্য করে। বৈঠকখানাঘরে সে আজকাল প্রায়ই বসে না তবু তারি ক্লান্ত মেরুদণ্ডের উদ্দেশে কুশন নিবেদন করা হচ্ছে নানা ফ্যাশনের; ফুলদানি একটাআধটা নয়, টিপায়ে টেবিলে ঝালরওআলা ফুলকাটা আবরণ। শােবার ঘরে দিনের বেলায় শশাঙ্কর সমাগম আজকাল বন্ধ, কেননা তার আধুনিক পঞ্জিকায় রবিবারটা সােমবারেরই যমজ ভাই। অন্য ছুটিতে কাজ যখন বন্ধ তখনও ছুটোছাটা কাজ কোথা থেকে সে খুঁজে বের করে, আপিস ঘরে গিয়ে প্ল্যান আঁকবার তেলা কাগজ কিংবা খাতাপত্র নিয়ে বসে। তবু সাবেক কালের নিয়ম চলছে। মােটা গদিওআলা সােফার সামনে প্রস্তুত থাকে পশমের চটি জোড়া। সেখানে পানের বাটায় আগেকার মতােই পান থাকে সাজা, আলনায় থাকে পাতলা সিল্কের পাঞ্জাবি, কোঁচানো