পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
দুই বোন

সেবায়েত। হেমন্ত বড়াে দুঃখ পেয়ে গেছে, তােক সে বড়াে ভালােবাসত, তাের এই পুণ্যকাজে পরলােকে সে শান্তি পাবে। তার রােগশয্যায় তুই তাে দিনরাত্রি তার সেবা করেছিস, সেই সেবাই তাের হাতে আরো বড়ো হয়ে উঠবে।” বনেদি ঘরের মেয়ে ডাক্তারি করবে এটাও সৃষ্টিছাড়া ব’লে বৃদ্ধের মনে হোলো না। রােগের হাত থেকে মানুষকে বাঁচানাে বলতে যে কতখানি বােঝায় আজ সেটা আপন মর্মের মধ্যে বুঝেছেন। তাঁর ছেলে বাঁচেনি কিন্তু অন্যের ছেলেরা যদি বাঁচে তাহলে যেন তার ক্ষতিপূরণ হয়, তাঁর শােকের লাঘব হেতে পারে। মেয়েকে বললেন, “এখানকার য়ুনিভার্সিটিতে বিজ্ঞানের শিক্ষাটা শেষ হয়ে যাক আগে, তার পরে য়ুরােপে।”

 এখন থেকে রাজারামের মনে একটা কথা ঘুরে বেড়াতে লাগল। সে ঐ নীরদ ছেলেটির কথা। একেবারে সােনার টুকরাে। যত দেখছেন ততই লাগছে চমৎকার। পাস করেছে বটে, কিন্তু পরীক্ষার তেপান্তর মাঠ পেরিয়ে গিয়ে ডাক্তারি বিদ্যের সাতসমুদ্রে দিনরাত সাঁতার কেটে বেড়াচ্ছে। অল্প বয়েস, অথচ আমােদপ্রমােদ কোনাে কিছুতে টলে না মন। ___লের