পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই বোন
৬৫

 শশাঙ্কের খাওয়াপরা অভ্যাসমতে চলছে কি না, ঠিকসময়ে ঠিক জিনিসের জোগান হােলো কি হােলো না, সেটা এ বাড়ির প্রভুর মনে গৌণ হয়েছে আজ; অমনিতেই অকারণেই আছে প্রসন্ন। শর্মিলাকে সে বলে, “তুমি খুঁটিনাটি নিয়ে অত ব্যস্ত হচ্ছ কেন। অভ্যাসের একটু হেরফের হোলে তো অসুবিধে হয় না, সে তো ভালােই লাগে।”


 শশাঙ্কর মনটা এখন জোয়ার ভাঁটার মাঝখানকার নদীর মতাে। কাজের বেগটা থমথমে হয়ে এসেছে। একটু কোনো দেরিতেই বা বাধাতেই মুশকিল হবে লোকসান হবে এমনতরো উদ্‌বেগের কথা সদাসর্বদা শােনা যায় না। সে-রকম কিছু প্রকাশ হোলে ঊর্মি তার গাম্ভীর্য ভেঙে দেয়, হেসে ওঠে,—মুখের ভাবখানা দেখে বলে, “আজ তোমার জুজু এসেছিল বুঝি, সেই সবুজ পাগড়ি-পর কোন্-দেশী দালাল—ভয় দেখিয়ে গেছে বুঝি।”

 শশাঙ্ক বিস্মিত হয়ে বলে, “তুমি তাকে জানলে কী ক’রে।” “আমি তাকে খুব চিনি। তুমি সেদিন বেরিয়ে গিয়েছিলে, ও একলা বারান্দায় বসে ছিল।