পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই বোন
৮৩

 যে এ-কাজ করেছে, যথাসাধ্য তার নাম আমি উহ্য রেখেছি। সে যদি তার স্বভাবসিদ্ধ মুখরতার সঙ্গে এই নিয়ে অনর্থক চেঁচামেচি করে তাহলে কথাটা ঘাঁটাঘাঁটি হয়ে যাবে। চটি নিযে চটাচটি সেইখানেই খাটে যেখানে মন খাঁটি। মহেশেব মতো নিন্দুকের মুখবন্ধ এখনি করতে পারাে একজোড়া শিল্পকাযখচিত চটির সাহায্যে। যেমন তার আস্পর্ধা। পায়ের মাপ এই সঙ্গে পাঠাচ্ছি।”

 চিঠিখানা পেয়ে ঊর্মি স্মিতমুখে পশমের জুতাে বুনতে বসেছিল কিন্তু শেষ করেনি। পশমের কাজে আর তার উৎসাহ ছিল না। আজ এটা আবিষ্কার ক’রে স্থির করলে এই অসমাপ্ত জুতোটাই দেবে শশাঙ্ককে সেই দার্জিলিঙ যাত্রার সাম্বৎসরিক দিনে। সে-দিন আর কয়েক সপ্তাহ পরেই আসছে। গভীর একটা দীর্ঘনিশ্বাস পড়ল— হায় রে কোথায় সেই হাস্যোজ্জ্বল আকাশে হালকাপাখায় উড়ে-যাওয়া দিনগুলি! এখন থেকে সামনে প্রসারিত নিরবকাশ কর্তব্যকঠোর মরুজীবন।

 আজ ২৬শে ফাল্গুন। হােলিখেলার দিন। মফস্বলের কাজে এ-খেলায় শশাঙ্কের সময় ছিল না, এ-দিনের কথা তারা ভুলেই গেছে। ঊর্মি আজ তার শয্যাগত দিদির পায়ে আবিরের টিপ দিয়ে প্রণাম করেছে। তারপরে