পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৪
দুই বোন

খুঁজতে খুঁজতে গিয়ে দেখলে শশাঙ্ক আপিসঘরের ডেস্কে ঝুঁকে প’ড়ে একমনে কাজ করছে। পিছন থেকে গিয়ে দিলে তার মাথায় আবির মাখিয়ে, রাঙিয়ে উঠল তার কাগজপত্র। মাতামাতির পালা পড়ে গেল। ডেস্কে ছিল দোয়াতে লাল কালি, শশাঙ্ক দিলে ঊর্মির শাড়িতে ঢেলে। হাত চেপে ধ’রে তার আঁচল থেকে ফাগ কেড়ে নিয়ে ঊর্মির মুখে দিলে ঘ’যে, তারপরে দৌড়াদৌড়ি ঠেলাঠেলি চেঁচামেচি। বেলা যায় চলে, স্নানাহারের সময় যায় পিছিয়ে, ঊর্মির উচ্চহাসির স্বরােচ্ছ্বাসে সমস্ত বাড়ি মুখরিত। শেষকালে শশাঙ্কের অস্বাস্থ্য আশঙ্কায় দূতের পরে দূত পাঠিয়ে শর্মিলা এদের নিবৃত্ত করলে।

 দিন গেছে। রাত্রি হয়েছে অনেক। পুষ্পিত কৃষ্ণচূড়ার শাখাজাল ছাড়িয়ে পূর্ণচাঁদ উঠেছে অনাবৃত আকাশে। হঠাৎ ফাল্গুনের দমকা হাওয়ায় ঝর্‌ঝর শব্দে দোলাদুলি ক’রে উঠেছে বাগানের সমস্ত গাছপালা, তলাকার ছায়ার জাল তার সঙ্গে যােগ দিয়েছে। জানলার কাছে ঊর্মি‌ চুপ ক’রে ব’সে। ঘুম আসছে না কিছুতেই। বুকের মধ্যে রক্তের দোলা শান্ত হয়নি। আমের বােলের গন্ধে মন উঠেছে ভরে। আজ বসন্তে