পাতা:দুই শিষ্য - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
দারোগার দপ্তর, ২০১ সংখ্যা।

ঘরখানি বড় বটে, কিন্তু আসবাবের কিছুই পারিপাট্য ছিল না। ঘরের মেঝের উপর একখানি ব্যাঘ্রচর্ম্ম পাতা ছিল। মনোহরগিরি স্বয়ং সেই আসনে উপবেশন করিলেন এবং আমাকে তাঁহার সম্মুখে বসিতে অনুরোধ করিলেন।

 যোগীপুরুষের সহিত একাসনে উপবেশন করিতে আমার ইচ্ছা ছিল না। সেই কারণে তিনি উপবেশন করিতে অনুরোধ করিলেও, আমি তাঁহার অনুরোধ রক্ষা না করিয়া সম্মুখে দাঁড়াইয়া রহিলাম।

 মনোহরগিরি আমার মনোভাব বুঝিতে পারিলেন। তিনি বলিলেন, “আমাদের এখানে আপনার উপযুক্ত আসন নাই। পূর্ব্বেই বলিয়াছি, আমিই এই মন্দিরের সেবায়েত। কালভৈরবের মাসিক আয়ও যথেষ্ট। আমিই তাহা ব্যয় করিয়া থাকি, অর্থাৎ আমারই আদেশে তাহা ব্যয় করা হয়। কিন্তু তাহা হইলেও কেবল আমার বা আমার শিষ্যগণের সুখ-স্বচ্ছন্দের জন্য সে অর্থ ব্যয় করিতে পারি না। যাহার জন্য এই অর্থ সঞ্চিত আছে, আমাকে তাহারই জন্য উহা ব্যয় করিতে হয়। এইজন্য আমাদের এখানে অনাবশ্যকীয় কোন আসবাব দেখিতে পাইবেন না। বিশেযত, আমরা সকলেই সংসার-বিরাগী সন্ন্যাসী মাত্র। ঈশ্বরোপাসনাই আমাদের কার্য্য এবং আত্মার উৎকর্ষ লাভই আমাদের অভিপ্রেত। তাই বলিতেছি, আপনি অনুগ্রহ করিয়া ব্যাঘ্রচর্ম্মের উপরই উপবেশন করুন।”

 সেবায়েত মনোহরগিরির কথায় আমি লজ্জিত হইলাম। তাঁহার কথায় প্রথমে ভাবিয়াছিলাম, তিনি হয়ত আমার মনোগত অভিপ্রায় বুঝতে পারিয়াছেন। কিন্তু তাঁহার সকল কথা শুনিয়া