বোধ হইত। এইরূপে কিছুকাল গেল; কিন্তু সে সকল পরিচয়েই বা প্রয়োজন কি? আমার পরিচয় দেওয়া হইয়াছে, অন্য কথা আবশ্যক নহে। কালে আমি পুনর্ব্বার স্বামিপ্রণয়ভাগিনী হইয়াছিলাম, কিন্তু অম্বরপতির প্রতি তাঁহার পূর্ব্ববৎ বিষদৃষ্টি রহিল! কপালের লিখন! নচেৎ এ সব ঘটিবে কেন?
আমার পরিচয় দেওয়া শেষ হইল। কেবল আত্মপ্রতিশ্রুতি উদ্ধার করাই আমার উদ্দেশ্য নহে। অনেকে মনে করে, আমি কুলধর্ম্ম বিসর্জ্জন করিয়া গড়মান্দারণের অধিপতির নিকট ছিলাম। আমার লোকান্তর হইলে, নাম হইতে সে কালি আপনি মুছাইবেন, এই ভরসাতেই আপনাকে এত লিখিলাম।
এই পত্রে কেবল আত্মবিবরণই লিখিলাম। যাহার সংবাদজন্য আপনি চঞ্চলচিত্ত, তাহার নামোল্লেখও করিলাম না। মনে করুন, সে নাম এ পৃথিবীতে লোপ হইয়াছে। তিলোত্তমা বলিয়া যে কেহ কখন ছিল, তাহা বিস্মৃত হউন।”―
ওস্মান লিপিপাঠ সমাপ্ত করিয়া কহিলেন, “মা! আপনি আমার জীবন রক্ষা করিয়াছিলেন, আমি আপনার প্রত্যুপকার করিব।”
বিমলা দীর্ঘনিঃশ্বাস ত্যাগ করিয়া কহিলেন, “আর আমার পৃথিবীতে উপকার কি আছে? তুমি আমার কি উপকার করিবে? তবে এক উপকার―”
ওস্মান কহিলেন, “আমি তাহাই সাধন করিব।”
বিমলার চক্ষু প্রোজ্জ্বল হইল, কহিলেন,―“ওস্মান! কি কহিতেছ? এ দগ্ধ হৃদয়কে আর কেন প্রবঞ্চনা কর?”
ওস্মান হস্ত হইতে একটি অঙ্গুরীয় মুক্ত করিয়া কহিলেন, “এই