পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মোগল-পাঠান
১৭
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
নবীন সেনাপতি

 শৈলেশ্বর-মন্দির হইতে যাত্রা করিয়া, জগৎসিংহ পিতৃশিবিরে উপস্থিত হইলে পর, মহারাজ মানসিংহ পুত্ত্রপ্রমুখাৎ অবগত হইলেন যে, প্রায় পঞ্চাশৎ সহস্র পাঠান-সেনা, ধরপুর গ্রামের নিকট শিবির-সংস্থাপন করিয়া নিকটস্থ গ্রাম সকল লুঠ করিতেছে এবং স্থানে স্থানে দুর্গ নির্ম্মাণ বা অধিকার করিয়া, তদাশ্রয়ে একপ্রকার নির্ব্বিঘ্নে আছে। মানসিংহ দেখিলেন যে, পাঠানদিগের দুবৃত্তির আশু দমন নিতান্ত আবশ্যক হইয়াছে, কিন্তু এ কার্য্য অতি দুঃসাধ্য। কর্ত্তব্যাকর্ত্তব্য-নিরূপণজন্য সমভিব্যাহারী সেনাপতিগণকে একত্র করিয়া এই সকল বৃত্তান্ত বিবৃত করিলেন এবং কহিলেন, “দিনে দিনে গ্রাম গ্রাম, পরগণা পরগণা, দিল্লীশ্বরের হস্তস্খলিত হইতেছে, এক্ষণে পাঠানদিগকে শাসিত না করিলেই নয়, কিন্তু কি প্রকারেই বা তাহাদিগের শাসন হয়? তাহারা আমাদিগের অপেক্ষা ও সংখ্যায় বলবান; তাহাতে আবার দুর্গশ্রেণীর আশ্রয়ে থাকিয়া যুদ্ধ করিবে; যুদ্ধে পরাজিত করিলেও তাহাদিগকে বিনষ্ট বা স্থানচ্যুত করিতে পারিব না; সহজেই দুর্গমধ্যে নিরাপদ হইতে পারিবে। কিন্তু সকলে বিবেচনা করিয়া দেখ, যদি রণে আমাদিগকে বিজিত হইতে হয়, তবে শত্রুর অধিকার-মধ্যে নিরাশ্রয়ে